আড্ডাটাকে গাড্ডা মেরে বড়দা গেলেন বাড্ডা
ধারে কাছে কোথাও আছে, জায়গার নাম নর্দ্দা।
গিন্নী আছেন শিন্নি আশায় পীর সাহেবের দরগায়
বড়দা থাকেন ব্যাজার তবু তেল দেন তার চরকায়।


পীর সাহেবে ধীর মেজাজে বয়ান করেন শুরু
কেমন করে হারিয়ে গেছে হারাধনের গরু।
বড়দা ফোঁসেন মনের ভিতর বাইরে কাশেন গলা
শিন্নি খাওয়া বাদ দেয়া কি ফাঁসী গলায় তোলা!


এদিকে চান ওদিকে চান, যেদিকে চান এ কী!
তাদের দিকে তাকিয়ে সবাই, খাঁচার পশু নাকি!
সুযোগ বুঝে গিন্নীটাকে গোত্তা দিলেন গায়ে
চল চলে যাই, আর কাম নাই, সালাম করে পায়ে।


তবুও গিন্নী কদমবুসি করেই ফিরলো ঘরে
বিন্নি ধানের শিন্নি খেয়ে মনটা কেমন করে!
মনের মধ্যে কী যেন হয়, পেটটা ভরো ভরো
বছর হলো এ সংসারে হয়নি এমন তরো।


শিন্নি খাবার চান্নি পরে গিন্নী কাঁদেন ঘরে,
তার কান্নায় শালক মশায় ভেবে ভেবেই মরে।
আদরের বোন নয়নমনি, জামাই এতো ভালো
সেই ভগ্নীর হঠাৎ করে ক্যামন ব্যামো হ’লো!


বড়দা চলেন দুলকি চালে খোঁজেন কোথায় রাড্ডা।
শ্যালক মশায় ভেবে না পায় এসব ক্যামন ঠাট্টা!
আড্ডা রেখে রাড্ডা গিয়ে বলেন বদ্যি ভায়া
গিন্নীটাকে শিরনী খাইয়ে বেইড়ে গেছে মায়া।


রাড্ডা ভায়াও ঠাট্টাচ্ছলে বলেন, নেন মানিয়ে
পর্দা করে আর কি হবে গিন্নী দিন জানিয়ে
বড়দা এবার কর্তা হবেন, হবেন ছেলের বাবা
কানে পালক গুঁজে শ্যালক ভাবটা ধরেন হাবা।


সময় মত হৈল ছেলে কী সোন্দর মুখ
খালি কেমন লম্বাটে নাক, চওড়া দুই চিবুক
গায়ের বর্ণ গৌর বর্ণ, অন্য রকম জ্যোতি
যদিও বড়দা দেখতে কৃষ্ণ, বৌদি অরুন্ধতী।


ঘরের লোকে পরের লোকে কত কথাই কয়
কালো বাপের ধলা ছেলে কেমন করে হয়!
বড়দা বলেন, বোকার কথা, মায়ের বর্ণ দেখো
দুধের উপর আলতা যেনো, এটা মাথায় রেখো।


মাথাতে চোখ তিন হাত পা-র এলিয়েন তো নয়,
মানব জাতি, সেটাই খোকার আসল পরিচয়।
মুখেই বলে মনটা কিন্তু বেজায় কেমন করে
কৃষ্ণ ঘরে কার্তিক রূপ এলো কেমন করে!


গভীর চোখে তাকিয়ে সেই বড়দা চমকে ওঠে
দেহের বরণ, চুলের ধরণ, চিকণ গোলাপ ঠোঁটে।
একই রকম মুখের গড়ন, চোখের মনির জ্যোতি
এ চোখ যেন কোথায় দেখা, বড়দা খোঁজেন পুঁথি।


ধীরে ধীরে বড়দা বোঝেন, জগত চমৎকার
চক্ষু বুঁজে রক্ষা কোথায়, মানুষ দেয় না ছাড়।
বড়দা আমার তাতেই খুশি, শিন্নি গুণের ভার
ঘুচে গেছে আটকুড়া নাম, গিন্নী সমাচার।।


এস, এম, আরশাদ ইমাম//অবিনাশীসময়
১৮অক্টোবর২০১৫; রবিবার; ০৩ কার্তিক১৪২২//ঢাকা।