আজ দেখছি একুশটি বছর, যেন কিছু নয় ভালবাসাভরা সময়
যে শিশু সেদিন ভূমিষ্ঠ হয়েছিল, পায়ে পায়ে বড় হয়ে
আজ যে তীব্র টগবগে এক তরুণ, ত্যেজোদীপ্ত দৃষ্টি, চোখ
আমারই পাশে দাঁড়িয়ে আঙ্গুল উঁচিয়ে শাণিত অভিব্যক্তি।


সেদিন যে শিশু প্রথম হামাগুড়ি দিয়েছিল, আমার সামনে
তাদেরই কেউ কেউ আজ অপুষ্টি আক্রান্ত জাতিকে ভালবেসে
বাধ্যতামূলক হামাগুড়ি হতে উদ্ধারে আঙ্গুল বাড়িয়ে ধরে, পেতে দেয়
ভালবাসার উজ্জ্বল আলোয় উদ্ভাসিত বুকের জমিন।


তাদেরই কেউ কেউ আজ ঘণকৃষ্ণ শশ্রুমন্ডিত, মাথায় চাঁদোয়া
অথবা শুধুই জিন্স প্যান্ট-টি শার্ট বা খাটো পা কালো প্যান্ট
এর সাথে ফুলশার্ট ধা্রী, করে ধর্মের ফেরী, পিছনে দেখি
একাত্তরের খুনীদের জলছাপ দেয়া ব্যাকগ্রাউন্ড-গ্রে হাউন্ড।


আর একদল শিশু, অভিলাসী জীব, সমাজ-রাষ্ট্র-পরিবার বোঝেনা
বিলাস আর বিলাস, গাড়ী-নারী-বাড়ী, পিতার নাম জারী,
ভোগের রোগে ভোগে সারাক্ষণ, প্রেমও পরাজিত হয়ে
নতজানু তাদের কাছে, উড়ে চলে ডালে ডালে পরিযায়ী মন।


আমাদের আদলের সেই সব দিন, আজ অতি প্রাচীন, দৃষ্টিহীন
এখন লেখে না কেউ প্রেম পত্র, কোনদিন, ধুলায় লুটায় মলিন।
আমাকে পাই না খুঁজে আজকের প্রেমিকের মনে, আছি সন্ধানে
যদি পাই জানাবো তোমাকে, প্রিয়, আমাদের জন্মদিনে।


এখন ভালোবাসা দ্রুতগামী নিউক্লিয়ার ট্রেন, প্রেমিক মন আজ
পেলিক্যানের ঝাঁক, এখানে কপোত কপোতী পালিয়েছে, বেড়ালের ভয়ে
বিশ্বাস এখন যাদুঘরে পাওয়া যাবে অচিরেই, আযোজন চলছে খুব।
আমি তুমি বুড়ো-বুড়ি, আধুনিক চোখে, যদিও মনেতে আমি
ছুঁতে পারি তোমার চিবুক, মুছে দিতে পারি কান্না ভরা মনস্তাপ;
এখনো আমি রাখতে পারি হাত ভালবেসে, তোমার নির্ভার বুকে
ছোঁয়াতে পারি ঠোঁট, কাম ও কামনাহীন, শরীরহীন উত্তাপ;
এখনো ধরতে পারি জোছনার ফুল, কদমের মাদক সুবাস
এখনো আঁকতে পারি রেনোয়ার ফুল বাগান, সুলতানের পেশল বাহু
বলতে পারি ভালোবাসি, ভালোবাসা অমিয়, যদিও হারিয়েছি অনাবশ্যক
অনুসন্ধিৎসু তরুণ মন, পেরিয়েছে ভালবাসার একুশটি বছর, যদিও।
আমাদের এই একুশতম যৌথ জন্মদিনে, প্রিয়, ভালবাসাটাই নিও।


এস, এম, আরশাদ ইমাম//অবিনাশী সময়
২৫ অক্টোবর ২০১৫; রবিবার; ১০ কার্তিক//টাঙ্গাইল