তোমাকে ছুঁইনি কখনো, কে বলে, ছুঁয়ে দেখেছি কতবার
কখনো ক্যাম্পাসের লেকচার গ্যালারীতে
কখনো গ্যটে ইনস্টিটিউটের উল্লম্ব ঝুল বাতির নিচে
বা কখনো বিমানের ককপিটে, ছুঁয়ে দেখেছি দুনির্বার।


হয়তো স্পর্শ করতে পারিনি, কারণ তুমি ছিলে অন্ধের মতো
নিজস্ব জগতের গভীর ভিতরে, খুব একা,
তবু চলতি পথে, ব্যস্ততায়, কিংবা বৃষ্টিমুখর বর্ষাতি রাতে
শিল্পকলা একাডেমীতে বা রামপুরা ব্রীজে তোমাকে দেখা।


তুমি কখনো সুচিত্রা, কখনো ম্যাডোনা- গ্রীক থেকে উঠে আসা
কখনো গ্রামের সেই সরল ঋজু মেয়েটি-যে এখনো
মুখ তুলে চোখ রেখে কথা বলতে শেখেনি, কখনো তুমি
আকাশ নন্দিনী, যে কি না হার্ড ড্রিংক সার্ভ করছ মোহিনী হাস্যমুখে।


আমি সবখানেই ছুঁয়ে দেখি তোমাকে, তোমার অজান্তে।
তবু কিছু কিছু সময় আসে, ছুঁয়ে দেখা বা স্পর্শকে ছাড়িয়ে
স্পর্শহীনতাই অনেক বড়ো হয়ে আসে।
মনে পড়ে স্পর্শহীন সেই সময়কে যেদিন আমার জন্য
হেঁটে এসেছিলে, ছুটে এসেছিলে, উড়ে এসেছিলে
পরিপাটি শয্যা, সাজের টেবিল, পোশাকের সম্ভার একপাশে ঠেলে
মাত্র তিনটে জর্জেটের ওড়না, একটি সবুজ ব্রা আর
পার্পল কালারের হেড গীয়ার হাতে করে
তোমাকে এথেনার মতো সাজিয়ে নিতে-স্টাডিতে;
সেদিন তোমার মাথায়, বাহুতে, কাঁধে, কোমরে, বুকে আর
পিন আটকানো সবুজ ব্রার হুকে আমার ছোঁয়ার সঙ্গে স্পর্শও ছিল;
সেদিন গ্রীনরূমের অস্ফুট আলোয়,
উত্তাপে ঘেমে নেয়ে একাকার,
তবু শিল্পকলার স্টেজে তোমার-আমার পারফর্ম ছিল অনবদ্য।
তারপর তুমি ইতিহাস আর আমি ক্রীতদাস।।


এস, এম, আরশাদ ইমাম//অবিনাশী সময়
২৭ অক্টোবর ২০১৫; মঙ্গলবার; ১২ কার্তিক ১৪২২//ঢাকা।