পূর্ণিমা-
আমি দুই লক্ষ আটষট্টি হাজার সম্ভ্রম হরণ করেও
                     লজ্জিত হইনি মোটেও।
বরং সদর্পে ঘোষণা করেছি
‘‘সেসব ওসব ছিল না। এসব ওদের ওসব ছিল।
এখন ওরা এসব বলে ওসব করতে চায়।
ওসব কিছু হয়নি কখনো, এখনো নয়।’’
আমি লজ্জিত হই না।
ওসব বলার জন্য আমার
রয়েছে কয়েক লক্ষ জিহবা।
আমি অবশ্য সেই জিহবা দিয়ে
            কখনো খাই কখনো চাটি
            সরেস সরস দুধের বাটি
            কাদার মধ্যে বিছাই পাটি
সেই জিহবা দিয়ে আমি
            কখনো বলি কখনো বকি
            কখনো ডুবে খোদার প্রেমে
            কখনো চেতন মশগুল থাকি
            কখনো নিষিদ্ধতায় উঁকি।
আমার অসংখ্য জিহবা, অতিদীর্ঘ জিহবা
আমাকে মগের মুল্লুক থেকে এনে দেয়
পুরুলিয়ার আকাশ থেকে এয়ার ড্রপ-প্যাক ভর্তি
জাহাজ-ট্রলার ভর্তি, কারখানার জেটি ভর্তি
দশ বা তারও অধিক ট্রাক ভর্তি আস্কারা
কালো হ্যারি বা কুমড়ো পটাশদের বাবারা।


লজ্জা আমার জন্য নয়।
লজ্জা স্থানও আমার জন্য নয়, নয় আমার একার
তাই কোন অবগুণ্ঠন নয়, ওটা আমাদের সবার।
আমি স্বচ্ছতায় বিশ্বাস করি, (যেমন বিশ্বাস করে
বিশ্ব ব্যাংক, বিশ্ব মুদ্রা সংস্থা বা এইচএসবিসি),
তাই কোন অবগুণ্ঠন নয়;
তাই স্বচ্ছ সফেদ বেশে ঘুরা ফিরা করি
স্বচ্ছ বসনাদেরও বড় কদর করি, আগে থেকেই।
তাই লজ্জা কী করে করি!


পূর্ণিমা আমাকে ক্ষমা কোরা না
আমি কক্ষণো ক্ষমা চাই না, সত্যি বলছি
কারণ, আমি ভুল করি না, যা করি
সজ্ঞানে স্বেচ্ছায় আট-ঘাট বেঁধে করি।
প্রিয়, তোমার সঙ্গে দেখা না হলেই ভালো হত।
অবশ্য ক্ষতি নেই, তুমি এসবের কোন কিছুই
কোনদিন জানতে পারবে না।


এস, এম, আরশাদ ইমাম//অবিনাশী সময়
৩০ অক্টোবর ২০১৫; শুক্রবার; ১৫ কার্তিক//ঢাকা


প্রিয় পাঠকের জন্যঃ    
""""""""""""""""
আপনাদের কি মনে আছে আমাদের পূর্ণিমার কথা? অক্টোবর, ২০০১ এর একদিন পাবনা অথবা সিরাজগঞ্জ অথবা বাংলাদেশের এক নিভৃত গ্রামের উপর ঝাঁপিয়ে পড়েছিল আর হামলে পড়েছিল কিশোরী পূর্ণিমার উপর একদল (ওদের নাম মুখে না নিয়ে ঘৃণায়, থু থু ফেলুন, তাদের জন্য)।‘‘বাবা আমার মেয়েটা খুব ছোট, তোমরা একজন একজন করে আসো’’….আমরা কি ভুলে গেছি? তাদের অপরাধ ছিল, তারা আওয়ামী লীগ করতো আর ভোট দিয়েছিল নৌকা মার্কায়। পূর্ণিমার স্মরণে আজ পনের বছর পর………. বিচার কী হয়েছে!!!