দীর্ঘ বর্ষার বৃষ্টিধারা ঝরিয়ে, চোখের হ্রদের পাশে
শীর্ণ করা নতুন সৃষ্ট নদীর ধারা বেয়ে ধীর পাথে আসছে শীত,
এলা বলে, হাওয়ায় কাঁপন টের পাই, টের পাই কুয়াশা
নিয়মিত রাতের চেয়েও দীর্ঘদেহী রাত যেন তার কালো চাদর
তার প্রসারিত হাত আরো প্রসারিত করতে করতে- আরো ছড়িয়ে
ক্রমশঃ ঢেকে দিতে আসছে, বাতাসে তার গন্ধ টের পাই।
জানি দীর্ঘ আলোহীনতা, প্রলম্বিত অন্ধকার
একবার এলে আর সহসা যাবে না। আবার ডুবব হিমযুগে হিমনিদ্রায়।


তবু কবিরা আজ কাব্য করে রাতের প্রদীপ জ্বালায়
খুঁজে পায় শিশির সোহাগ ভোরের ঘাসের ডগায়,
তবু জীবন পিয়াসী যারা প্রত্যুষের পদব্রজ চর্চায়
নতুন প্রাণ খোঁজে কুয়াশার অস্পষ্টতার ভিতরে ঘোর অমানিশায়,
শিল্পী-সাধক-গাতক স্বর সাধনে প্রাণান্তকর প্রচেষ্টাময়,
মাঝ একা বসে থাকে ঘাটে পারের কড়ির আশায়,
আর অলস আমি বসে ভাবি, থাকনা এ কাল, এই কাল হেমন্ত-
মাঠে মাঠে কচি কিশোর ধানের ডগা, সবুজ হিল্লোলময়
ছেঁড়া ছেঁড়া কুয়াশা-অাধো অাধো অন্ধকার, হারানো যায় আবার
খুঁজেও পাওয়া যায়; বরং আসুন ফিরিয়ে দিই ঘড়ির কাঁটা।
আঁধারে আমার বড় ভয়; একবার আঁধার-একবার শীত-একবার
জেঁকে বসলে সহসা আর সরে না।


আমি হিম যুগ চাই না, আমার পৃথিবী হোক ফুল পাখি গান
কাঠবেড়ালী, কালো ভ্রমর, চড়ুই বাবুই, শীর্ণ ধারা নদী
আর পায়ের নিচে ঘুমানো সোনা-হীরা-তেল ভরপুর ভূ-গর্ভ সমৃদ্ধ
ধূ ধূ বালুকাময় প্রান্তরের বিস্তীর্ণ দেশ হীন-সবুজ শস্যময়।
রত্নগর্ভা ভু-গর্ভের বদলে হোক আমার দেশ-প্রান্তর ভালোবাসাময়।
শুধুই ভালোবাসাময় সবুজ-সোনার বাংলাদেশ।
ঋতু বদলের এই কঠিন কালো বিড়ম্বিত সময়ে প্রকৃত প্রত্যাশা।।


এস, এম, আরশাদ ইমাম//অবিনাশী সময়
০৩ নভেম্বর ২০১৫; মঙ্গলবার; ১৯ কার্তিক ১৪২২//ঢাকা।