বুকেতে দারুণ শূন্যতা, মনেতে উপচানো জলও শুকাচ্ছে;
কাছে পিঠে যারা নিত্য ঢাক বাজাতো রণগম্ভীর
সেখানে এখন অালসেখানা খুলেছে কেউ,
               ‘‘অাজ বড় রফিকের ছ’টা
শুনলেই কেউ কেউ বলে ওঠে
                 চক্ষু মেলে কোন ব্যাটা’’
তখন তাদের অনেকে বলে ওঠে‘‘তুমি বড় প্যাচাল পাড় হে!’’


এখন কেবল শহরে অথবা শহরের বাইরে দূরের জনপদে
দু’একটা লাশ পড়ছে, পীরবাদী মুসল্লী বা ইমাম হলে,
তরীকার তফাৎ হলে, ফিরকা মতলববাজ হুজুর হলে,
শিয়া হলে-তাজিয়া হলে, আরো এ্যাকশন হবে,
হিন্দু, বৌদ্ধ, আহমদীয়া বা বাহাই অথবা খ্রীষ্টান,
দেশে বা বিদেশে, আরব মুল্‌ক স্থান না হলে আছে বাংলাস্তান।
কোথাও বেশ কয়েকদিন পর, মাটির নীচ থেকে
লাশ তোলা হচ্ছে, এর নাম ময়নাতদন্ত,
এখানে ময়নার কি কাজ জানি না!
বুঝি, এসব পুরনো কন্ট্রাক্ট, যে ক’টা বাঁকী ছিল,
একে একে শেষ হচ্ছে; তারপর কি?
বাতাসে অস্থির নীরবতা, গন্ধ ভাসে নোনতা
এবার কি আনতে হবে নতুন কোন তরীকা!


অস্থির রুদ্ধশ্বাস সময় উর্ধ্বমুখী সঙ্গীন হাতে
স্থির অপেক্ষমান, একটি হইসেলের অপেক্ষা,
স্তব্ধ হাওয়া, মাংস-চর্বি পোড়ার গন্ধ ভাসে,
এক সময় যারা নিয়মিত ছিল পাঠের আসরে, পানের বৈঠকে
আজ তারা শরাবন তহুরার নেশায় বুঁদ হয়ে
অঘ্রাণের বাতাস ভারী করে তুলছে, অন্য মদিরার ঘ্রাণে।


সময়ের কবিকে সব দেখতে হয়, রাত প্রহরীর মত,
যারা ঘুমায় তারা আড়মোড় ভেঙ্গে পাশ ফিরে শুধু
কিছু দেখে না তারা, প্রলয়-পরিবর্তন, ঘুমায় নিশ্চিন্তে,
প্রহরী মন প্রতিক্ষণ জেগে থাকে
রাতের এ অন্ধকারে কারা আসে কারা যায়,
কারা চুপিসারে ঘোরে, কোন সব ঘর দোরে,
কারা ফিসফিসায়, সময়ের কবি তার সব হিসেব
খাতায় টুকে রাখে, পরম ধৈর্য্যে, পরম যত্নে।


সময়ের ডাক এলে তাকে তার সব হিসেব
বুঝিতে দিতে অথবা মিলিয়ে নিতে হবে।


এস, এম, অারশাদ ইমাম//স্খলিত সময়
২৮ নভেম্বর ২০১৫; শনিবার; ১৪ অঘ্রাণ ১৪২২//ঢাকা।