কী বলবো তার কথা, ছিল সঙ্গী যে, আশৈশব-সাপ।
তাকে হারিয়ে ফেলেছি, কোন এক স্বপ্নে, মহাপাপ।


ছোপ ছোপ অন্ধকার মোড়া প্রত্যুষে, জলার ঝোপে
ফেলে আসা ফাসী জাল অথবা বড়শীতে, দেখি,
আটকে আছে অপরূপ উপহার, মাছের বদলে ব্যাঙ,
অথবা অবহেলে জলের ভিতরে ডুবানো হাত ছোঁয় সাপ!


সবুজ মাঠ, শিশিরভেজা ভোর অথবা ঘাসের শরীর
লজ্জাবতীর ফুল, বেগুনী আভা-প্রতিটি কেশর যেন
ধরে আছে ভোরের উজ্জ্বল সোনালী আভা-প্রকৃতির নাকফুল,
তখন মাথার ভেতরে অলৌকিক সাপ, ঝিম মেরে থাকে।


অথবা ভরদুপুরে খালের উপরে ঝুলে থাকা
আমের ডাল থেকে ঝুপ করে লাফিয়ে পড়া খালে
কিছুটা জলকেলী-ডুব সাঁতারের খেলা, এই বেলা
পাড়ে পেট ভাসিয়ে বসে আছে কালো হলদে সাপ।


বিকেলের খেলা শেষে, লাথি খেয়ে পা থেকে উড়ে গিয়ে
পড়ে ধানের ক্ষেতে, পরীক্ষার ফলের উপহার বল,
তাপর শুরু গন্ডগোল, জুতো খুলে খালি পায়ে ধানের
সারি ধরে এগনো, বলের দেখা, হাত বাড়াতেই জ্যান্ত সাপ।


রাত নামে, কুহক ঘুমের গভীরে ডুবে থাকে পৃথিবীর এক প্রান্ত
খুলে যায় অবচেতনের দরজা-জানালা-উঠান, ঘর-বাড়ী
খেলা করে অবাধ্য অবোধ সে শিশু ঘর-মন-মাঠময়
তখন হঠাৎ তাড়া করে সাপ, ভয়ঙ্কর বীভৎস দর্শন, হিম হিম ভয়।


কতকাল ধরে এই সাপ ছেয়ে আছে দেহ-মন-চেতন-অচেতন
ভয় দেখায়, তাড়া করে, কামড়ে দেয়-সয়ে যাই সে অত্যাচার;
তারপর মনে মনে প্রস্তুতি,  কোন এক রাতে ফের দেখা পাই তার ;
ছুরিতে খন্ড বিখন্ড করি রাত জাগা সেই সাপ, ছিন্ন-ভিন্ন।


এখন স্বপ্নের ভিতরে ভুল করে আসতে চেয়েও আবার
অভিমানে পালায় সে অস্তিত্ব থেকে-আসে না সে-সঙ্গী।


এস, এম, আরশাদ ইমাম//স্খলিত সময়
০৮ ডিসেম্বর ২০১৫; মঙ্গলবার; ২৪ অগ্রহায়ণ ১৪২২//ঢাকা।