ইদানিং এই সমস্যাটা খুব টের পাচ্ছি, শ্রুতি বিভ্রাট
নানারকম অদ্ভুত শব্দ শোনার জন্য কান টা টা করে
যদিও সে সব শব্দের জন্মই হয়নি আশে পাশে, হয়না।


বাইরে সুনসান নীরবতা, মৃতপুরী, কোন কোলাহল নেই
নিয়ম করে সকাল হচ্ছে প্রতিদিন, আবার দিনের সড়কে
গড়িয়ে গড়িয়ে যাচ্ছে রাতে, রাজপথে ব্যস্ত জনস্রোত-
সারাদিন, প্রস্তুতি, অফিস যাওয়া-ফিরে আসা, কর্মক্লান্ত
তারপর পরিবারের চাহিদা, দাবী মেটানো, বিশ্রাম, আবার
আরেকটি মহান দিনের অতি শুভ সূচনা-চলছেই চলছেই।


তবু একরাশ নৈঃশব্দ ঘিরে আছে, আশ-পাশ, পাড়া-গাঁ
মহল্লা, সড়ক, রাজপথ, বিশ্ববিদ্যালয়, চিন্তার জগত বা
চেতনা-নিঃসাড় হয়ে আছে চেনাজানা পরিমন্ডল, খুব।


অথচ এখনো কম্যুনিটি কম্যুনিটিতে ভিতরে ভিতরে
ব্যাপক প্রস্তুতি, নতুন মসজিদ তৈরি করা হবে, নরোম
কোমল মখমলের মেঝে, এসির সুশীতল হাওয়া, সৃদশ্য
ঝাড়বাতির মোহনীয় আলো, বিকল্প শক্তির সুন্দর ব্যবস্থা।
একসময় যারা ছিল রাজপথের লড়াকু মুখ, এখন নীরবে
তসবীহ্ জপেন মসজিদের মেহরাবের ডানপাশে বসে একা।


কারো কোন সময় নেই নষ্ট করার, শুধু নিশ্ছিদ্র নিখুঁত
দিনানিপাত, আর ই্হলৌকিকতার আকর্ষণীয় কেকের উপরে
পারলৌকিকতার লোভনীয় পরত। সব কিছু চলছে ঠিক-ঠাক।


তবু কান খোঁজে কিছু অশ্রাব্য শব্দ-যুদ্ধ, মুক্তাঞ্চল, বিজয়
তবু কোথাও শুনতে পাইনা ‘‘রক্ত যখন দিয়েছি, আরো.....
এবারের সংগ্রাম স্বাধীনতার সংগ্রাম’’ শুনি না কোথাও,
নাকি বধির আমার শ্রবণ শক্তি, সব কিছু ঠিক আছে, কেবল
আমি শুনি না, আর সবাই শুনছে, কী জানি, বয়স বেড়েছে!!
ডিসেম্বর এসে ফিরে যাচ্ছে, নীরবে, বিজয়ের উল্লাস শুনি? না।


এবার মনে হয় চিকিৎসকের শরণাপন্ন হতে হবে, শ্রবণ শক্তি
ফিরে পেতে হবে, ফিরে পেতে হবে কাঙ্খিত শব্দের নির্ঘোষ।
বেরিয়ে আসতে হবে শ্রুতি বিভ্রাট থেকে, শুনতে চাই বিজয়।।


এস, এম, আরশাদ ইমাম//স্খলিত সময়
১১ ডিসেম্বর ২০১৫; শুক্রবার; ২৭ অগ্রহায়ণ ১৪২২//ঢাকা।