আমি ভালো আছি বন্ধু, অনেক অনেক ভালো;
সেজন্য চোখে আমার আনন্দাশ্রু, চিবুক বেয়ে নামে স্বেদ বিন্দু।


এখন আমার মাঠে ফসলের কি বিপুল সম্ভার, স্বর্ণালী প্রান্তর
(যদিও আমার ফসল বিকোতে হয় মফস্বলের হাটে-বাজারে,
ন্যায্যমূল্য নামের সোনার হরিণ ধরা দেয়না,
ভালবাসার শস্য যায় মুনাফাখোর ফড়িয়াদের হাতে।)
এখন আমার শরীরে বসনের বাহার, ঈদে-পরবে,
বৈশাখে-শীতে, হরেক রঙের রকমারী বাহার
(যদিও এখনো, জানি না কেন, প্রতিবছরই নতুন শীতবস্ত্র
প্রয়োজন হয়, যদিও গতবছরের শীতবস্ত্র নিঃশেষ হবার কারণ নেই।)
এখন নগরের অট্টালিকার ভীড়ে আকাশকে দূরে ঠেলে,
নীল জোছনা হারিয়ে, কবি হয়ে উঠছে পানশালার পাখি, আর
প্রেমিক হয়েছে লাভ বাগ, এক নদীতে কত স্নান করা যায়!
(যদিও ফুটপাতে ঘোরে কালিঝুলি মাখা শিশু,
পলিথিনের ভিতরে প্রাণ সঞ্জীবনী সল্যুশন অথবা জুতার কালি।)


এখন কত সহজেই বৃক্ক বদলের আয়োজন সম্পন্ন করা যায়
কত সহজেই হৃদয়ের ভিতরে শার্টল পাঠিয়ে খোঁজ নেয়া যায়
অসুস্থ্যতার দাঁড়ি-কমা অথবা রোপণ করা যায়
নিরাময়ের নতুন সতেজ চারা, নতুন জীবনের জয়ধ্বনি;
এখন গ্রামে গ্রামে অপটিক ফাইবার কেবল, ইউনিয়ন থেকে
ইউনিয়নে সংযোগের মহাবিস্তৃত সরণী, জগত জোড়া জাল
(যদিও এখনও প্রতিটি গ্রামে, শহরে, নগরে, বন্দরে, হাটে-ঘাটে,
রেলস্টেশনে, অফিসে-আদালতে, বিদ্যালয়ে-প্রতিষ্ঠানে
এবং জনবসতিহীন মাঠের পাশে বা নিবিড় অরণ্যেও
দেখি সুবিশাল, সুললিত অবকাঠামো-প্রার্থনালয়,
মসজিদ-মাদ্রাসা-ধর্মীয় শিক্ষালয়, পৌরাণিক চিন্তার পুনর্জাগরণ।)


দেহাতী গ্রামে বা কসমোপলিটান নগরে, দেশে বা বিদেশে
একই দৃশ্যের ঘনঘটা, রিপিটেশন, পারমুটেশন, কম্বিনেশন।
দুঃখ ও গ্লানি আছে, নিজ নিজ রূপ দিয়ে, আপন আবর্তে
আছে নবতরু কিশলয়ও, আসে প্রাণের পরাগের স্ফুরণ
এসো ভালবাসি এই মানুষ হিসেবে জন্মগ্রহণকে
মৃত্যুর পর কোথায় যাবো, কী হবে তা ভেবে সময় ক্ষেপণের চেয়ে
এসো ভালবাসি এই জীবন, এর প্রতিটি মুহূর্ত তাই অরূপ রতন।
আর-- যে যেখানে যেভাবে আছি, সেখান থেকেই ছড়িয়ে যাই
ভালোবাসার জয় ডংকা, অনুভূতির স্পর্শ সুধা, প্রতিটি গ্রহ-নক্ষত্র থেকে
দ্বিধাহীন ঘোষিত হোক গ্যালাকটিক এ্যানাউন্স।।


এস, এম, আরশাদ ইমাম//স্খলিত সময়
১২ ডিসেম্বর ২০১৫; শনিবার; ২৮ অগ্রহায়ণ ১৪২২//ঢাকা।


<<<<<<<<<<<বোনাস কবিতা>>>>>>>>>>>>


মরুর গোলাপ


মরুভূমিতে আজ ফুটছে গোলাপ কাঁটার ব্যুহ ফুঁড়ে
কালো নেকাবের সময় ফুরালো সফেদ পায়রা ওড়ে।
কত জনমের বন্ধনে ঘেরা বালুর গভীরে ঢাকা
গোলাপ কুঁড়ির উত্থান পথে ধুলি মাখা পদরেখা।
মাটির গভীরে সুড়ঙ্গ পথে লুকানো সে অধিকার
ভূতলে উঠে সে সৌরভ দিয়ে মুছেছো অন্ধকার।
মানুষের মত মানুষ করবে প্রকাশ আগামী দিনে
গণমত হবে প্রতিফলিত নেবে নতুন দিগন্ত চিনে।


অারবের বুকে যে নারী আজকে আলোতে বেরিয়ে এসে
নতুন আলো ছড়িয়ে দিচ্ছ মুক্তির দিকে দিকে
তোমাদের এই জাগরণ আজ সময়ের খুব দাবী
যখন সমাজে কূপমন্ডুকদের আঁধারের কারসাজি,
তোমরাই পারো এই শতকের হতে নয়া কান্ডারী
তোমাদেরই হাতে সভ্যতা ছোঁবে আরেক শতক-নাড়ী।
অভিনন্দন তাই তোমাকে রমণী, আজকে হয়েছ নারী
তোমার এ নতুন যাত্রা পথ হোক সুদূর সম্প্রসারী।


আরশাদ:alien: প্রমোদ কক্ষ
১২ ডিসেম্বর ২০১৫, শনিবার, ঢাকা।