এক.


খুব কম সময়ের ভিতরেই তিনি চলে গেলেন
অর্থাৎ অপারেশন সাকসেসফুল; তখন কারো কারো
মুখ সহাস্য ব্যাদান। সফল কাম তাঁরা।


আর আমরা প্রায় দশটি বছর ধরে হন্যে হয়ে খুঁজছি
কারা সেই সফল অপারেশন করে বেশ তবিয়তে আছে।
আমরা অসীম ধৈর্য্যশীল, যদিও আসমা ততটা না;
তিনি কতবার ফুটপাতে নেমেছেন-বৃদ্ধ বয়সে,
ব্যানার হাতে দাঁড়িয়ে থেকেছেন, যদিও আমরা
দেখতেও পাইনি, শুনতেও না। তিনি হতাশ হয়েছেন এবং
কোন রকম অপারেশন ছাড়াই চলে গেলেন তাঁর কাছে,
যিনি কিবরিয়া নামে পরিচিত, যিনি অর্থমন্ত্রীও ছিলেন
এই বিচিত্র বাংলাদেশে। তাঁর প্রস্থানে আমাদের কী যায়
বা আসে, আমরা তো আছি বেশ বহাল তবিয়তে।


দুই.


সারা বাংলাদেশে তখন একটাই বটগাছ ছিল
আর সব ছিল অশ্বত্থ বৃক্ষ, রমনায়।
এখন জানি আসলে ঘটনাটা উল্টো-সারাদেশে যাই থাকুক,
রমনারটি ছিল অশ্বত্থ-যদিও আমরা জেনেছি সেটা বট।
যেখানে এখনও বসছে প্রভাতের সুরের আসর
বৈশাখের প্রথম প্রহরে সেই অর্ধ শতক ধরে।


আর একজন মানুষ ছিলেন যিনি বা যার সহধর্মনী
হাত ধরে শিশুদের এনে বসিয়েছিলেন সেই
ভুল বৃক্ষতলে, শুদ্ধের সমারোহে, লাল সাদা ধরে।
তারপর আমরা পা রেখেছি নতুন সময়ে
নতুন প্রত্যুষে, নতুন আলোয়, নতুন বার্তা নিয়ে;
সে আলো ঘরে ঘরে পৌঁছেছিল,
আমরা সেই আলোর নহরে একটি নৌকাকেই ভাসাই
ভাসতে ভাসতে ঠিক পৌছেছি সঠিক তীরে
ওয়াহিদুল আর সনজীদার হাত ধরে-তাই নয় কি?


কিন্তু ওয়াহিদুল চলে গেছে-আমরা কী সনজীদাকেও
হারাতে বসেছি? নয়? তবে রমনার বৈশাখী আয়োজনে
এক কীসের ভয়? বোমার ভয়! নিরাপত্তার ভয়!
নিরাপত্তার চাদরের নিশ্চয়তার বাড়াবাড়ি ভয়!
হোক না কিছু ক্রস ফায়ার তাদের জন্য, যারা
বট-অশ্বত্থের সংঘবদ্ধতার বিরুদ্ধে গুপ্ত ঘাতক পাঠায়,
যারা বৈশাখের বিরুদ্ধে সীরাতুন্নবী সাজায় বা
বাঙ্গালীর প্যাডে হিন্দুয়ানার লোগো লাগায়।


এস, এম, আরশাদ ইমাম//স্ফুরিত সময়
২৭ জানুয়ারী ২০১৬; বুধবার; ১৪ মাঘ ১৪২২//ঢাকা।