(পূর্ব প্রকাশের পর...)


কত যে দখিন জানালা পার হয়েছে
আকাশের এক মুঠো মাটিতে জ্বলতে দেখেছি
রাতের স্নিগ্ধ উনুন, বাতাসের সখা এসে
বলে গেছে ঘোর লাগা ভোরের গল্প-
তারপর,
দখিন গেছে, হারিয়ে ফেলেছি প্রেয়সী প্রদোষী চাঁদ
অথবা জোছনা, হারিয়েছি চাঁপা বকুল
বা হলুদ কুমড়ো ফুলের পরাগায়ন বেলা
ভুলে থাকতে হয়েছে ঘরের চালায়
মা’র হাতের সেই অপূর্ব পরাগায়ন।


এখন শুধুই নিষ্প্রাণ বাউল সময়
ঘিরে আছে স্মৃতির ভাঁড়ার ঘর, রোমন্থনের ধুন
এখন আরশোলার ত্রস্থ সঙ্গীতে ভরে থাকে
সঞ্চয়ের সকল গোপন প্রকোষ্ঠ, মনের অন্ধ গহ্বর।


আজ জাতক-জাতিকারা ঘর ভরে রাখে কোলাহলে,
লোকালয়, তবু নৈঃশব্দের ভিতরে আমার
অলৌকিক অবগাহন সবার অলক্ষ্যে, জানি
এ অবগাহন কাউকে ছোঁবে না, তবু যেন মন বলে
আসুক, এসে ছুঁয়ে যাক তারা স্মৃতির পলেস্তারা।


না, সে সব হবার নয়, কোনদিন হবে না। জানি,
একদিন এইভাবে নিভে যাবো,
দক্ষিণের জানালার জলপাই আলো এসে আর
চুম্বন সুরায় ভেজাবে না চোখের পাতা;
আর কখনো অতিক্রান্ত শীত-বসন্ত
পুরাতন মৌতাত ফিরিয়ে আনবে না, জানি।


আমার প্রস্থানের পরও পৃথিবীতে থেকে যাবে
এইসব কথকতা, পৃথিবী চলবে আগের নিয়মেই
বদলে বদলে-নিজেকে নিজের মতো করে।
শুধু আমার আর নিজেকে বদলানো হবে না।
পৃথিবী তোমাকে বিদায় জানানোর
এর চেয়ে মহোত্তম কোন উপায়
আমার জানা নেই, হয়তো কারো থাকে না।


২৪ ফেব্রুয়ারি ২০১৬; বুধবার; ১২ ফাল্গুন ১৪২২
স্ফুরিত সময়//ঢাকা।