আমি একটি শিশু বেচব, কিনবে?
অনেক সময় ধরে প্রতীক্ষারত, ক্রেতা পাইনি।
মাত্র দু’কেজি চাল দিও বিনিমিয়ে, প্রচন্ড ক্ষুধা!
অথবা দু’কোশা পানির অমিয় ধারা, সেই দশ ঘন্টা
স্থানুর মতো দাঁড়িয়ে, যদিও নেকাব মাথায়,
হিজাবে আবৃত সারা দেহ-মন, তবু লু হাওয়া
পুড়িয়ে দিচ্ছে শরীর, ঘিলু ও শিশুর মাতৃস্তন-
বুকের ভিতরে মরুর জলশূন্যতা; পেটে অাশ্রয় নিয়েছে
শেয়াল-কুকুর-গাধা অথবা বুনো গাছের ছাল; এখন
এগুলো হারামও নয়, হালালও নয়, শুধুই খাবার।


আমি একখন্ড জমি বেচব, নেবে?
এর নিচে আছে লক্ষ বছরের সঞ্চিত তেল গ্যাস বা
তরল সোনা, আছে মাটির বদলে কারুণের ধন;
বিনিময়ে চাই একখন্ড সবুজ জমিন, পায়ের তলায়
কোমল মায়াবী মাটি, পানির ধারা যখন তখন,
লু হাওয়ার বদলে শ্যামল কোমল মায়াবী ফাগুন হাওয়া,
এক লিটার ভোজ্য তেল অথবা ২টি পাউরুটি।
না হয় দেশান্তরী হবো, চলে যাব অনিশ্চিত কোন পথে,
গন্তব্যে-না হয় হয়েই গেলাম নামহীন-গোত্রহীন।


তবে বেচতে চাইনা আমাকে, আমি নারী।
প্রয়োজনে সেটাও বেচতে পারি, যেমন বেচছে
বিনামূল্যে আইএস এর প্রমীলা যোদ্ধারা;
না আমি অতটা সাহসী নই পারি না তাই, কারণ
আমার ভিতরে এখনো মাতৃপ্রেম, দেশপ্রেম, মানব প্রেম
প্রবল জেগে আছে; এখনো স্বপ্ন দেখি একদিন এই ভুখন্ড
শ্বাপদের ক্ষুরধ্বনিমুক্ত হবে, প্রজ্জ্বলিত নীলাভ শিখার
দহন নিভে যাবে একেবারে, প্রতিটি তেলক্ষেত্র
মৃত হবে, প্রতিটি পর্বত হবে নিষ্প্রাণ, নিষ্ফলা আর
প্রতিটি লোকালয় হবে শ্মশানপুরী,
পরবর্তী কয়েক সহস্র বছর ও কয়েকটি সভ্যতা জুড়ে;
তারপর সেই শ্মশান হতে প্রাণ ফিরে পাবে
বিলুপ্ত কোন উদ্ভিদ প্রজাতি...এবং তারপর মানবজাতি।।


২৭ ফেব্রুয়ারি ২০১৬; শনিবার; ১৫ ফাল্গুন ১৪২২
স্ফুরিত সময়//ঢাকা।