আমার অস্তিত্বটি কবে যেন বিলুপ্ত হয়ে গেছে
টের পাইনি, ছিলাম আত্মমন্থনে ব্যস্ত,
মাথা তুলে চোখ মেলে দেখি পাল্টে গেছে দৃশ্য,
চরাচর, আমার কুহক মন্থন এমনই।


এরি মধ্যে খুন হয়েছে আমার সেতারটি
নিহত হয়েছে আমার ছোট্ট প্রাথমিক বিদ্যালয়টি
আমি একটি সাময়িকী বের করতাম, নিয়মিত
থাকে হত্যা করা হয়েছে, কলমের বদলে তলোয়ার দিয়ে,
আমার একটি সুরমন্ডল ছিল, স্বরতন্ত্রী ছিন্ন-বিচ্ছিন্ন করায়
তাতে ধুলো জমছে, হয়তো আর কিছুদিন পর
চলে যাবে সেটা দৃষ্টির আড়ালে,
অার মনেও পড়বে না, ভুলে যাব বয়েসী বটতলাকেও।


এরি মধ্যে আমার কানে বাসা বেঁধেছে মাকড়শা
সেখানে ডিম পাড়া হয়েছে, বাচ্চা ছড়িয়ে পড়ছে
কান থেকে মস্তিস্কে, সেখানে এখন শুধুই বাণী আর বাণী;
আর কিছু পশে না কানে, আমার একী হয়েছে!
আমার সেতারটি এখন পড়ে আছে ইসলামের শ্মশানে
আমার বিদ্যালয়টির প্রতিটি ইটে নির্মিত হচ্ছে প্রার্থনাশালা
সাময়িকীর পৃষ্ঠায় এখন একেকটি ধর্মীয় শ্লোক মুদ্রণাধীন
সুরমন্ডল এখন কেবলই তেলাওয়াতের মত ধ্বনিময়।


আমার কী হলো! ভুল শুনছি কি? যেখান থেকে
আমার চিরায়ত জীবনের লোবানের সৌরভ আসার কথা
সেখানে উড়ছে পারলৌকিক আগরের ঘ্রাণ,
আমি কি জীবিত, সপ্রাণ? নাকি নিদ্রিত, নাকি জীবন্মৃত?


কেউ কি আছে আমাকে পদাঘাত করে জানিয়ে দেবে
আমি জাগ্রত, নাকি জীবিত, নাকি জীবন্মৃত?


বট ও পাকুড় (অনুসন্ধান)/ঢাকা
১২ বৈশাখ ১৪২৩/সোমবার/২৫ এপ্রিল ২০১৬