‘‘আল্লাহ ছাড়া আমার কেউ নাই, এরা আমার কেউ না’’
.......................................................................


ধর্মে বিশ্বাস করবে, আর ধর্মীয় বাণীতে বিশ্বাস রাখবে না
এটাতো নাফরমানী। তুমি করলেও তোমার পুত্র-দৌহিত্র করবে না।
আল্লাহ্‌ বলেছেন যদি তোমার পিতা-মাতা অবিশ্বাসী হয়,
তবে তাদেরকে ত্যাগ করো....সে করেছে, সে তো
                                           খারাপ কিছু করেনি।
তুমি তাকে তোমার মত বিশ্বাসী হতে বলছ
সে হয়েছে তার নিজের মতো বিশ্বাসী,
                                           দোষ তো করেনি।


তোমার প্রতিদিনের চৌর্য্যবৃত্তি, তোমার প্রতিদিনের
লোক ঠকানো,
হারাম প্রবৃত্তি, পানাহার ও যথেচ্ছ যৌনাচার
তাকে তোমার প্রতি ক্রমশঃ বীতশ্রদ্ধ করেছে,
সে ও এর ভিতরে প্রবৃত্ত হচ্ছিল, প্রলুব্ধ হবার চেষ্টা করছিল,
এসবকেই জীবনাচরণ হিসেবে মেনে নিচ্ছিল
                                            ধীরে ধীরে,
যদিও মন থেকে সায় পাচ্ছিল না। কেননা,
তার চোখের সামনে ছিল দারিদ্র ক্লিষ্ট অনেক মুখ
                                         অপচয়ের বাড়াবাড়ি
                                         আর বিলাস চচ্র্চিত অপ-জীবন,
সে তেমনই বুঝেছিল, তাই সে সব তাকে হৃদয় থেকে টানেনি।
সে খুঁজছিল মুক্তির পথ, পরিত্রাণের উপায়-অবচেতনে।
তুমিই তাকে সে সুযোগ এনে দিয়েছ, তাকে
পাঠিয়েছ তার যাপিত জীবনের পরিধির বাইরে
                               অন্য সাগরে, অন্য আলোয়
মুক্তির চাতক তাকে সূর্যমুখী করেছে, মোমবাতির আলোক
শিখায় বেড়ে ওঠা প্রাণ সূর্য সন্ধানী হয়েছে
তারপর....তাপে তাপে তাপে দৃষ্টি হারিয়ে অন্ধ হয়েছে
                                    পুড়ে অঙ্গার হয়েছে
তুমি তোমার চিরাচরিত চোখে সে কয়লা দেখতে পাওনি।
তোমার আত্মজ মরেছে তোমার প্রত্যক্ষ ও পরোক্ষ আগুনে।
এখনও বুঝতে পারোনি, দেবালয়ে আগুন লাগলে কেউ বাঁচে না।


যদি ভালবাসতে সবুজ....বাংলার গ্রাম-মাটি-নদী
যদি ভালবাসতে বাংলা....ভাষা-চেতনা-সংস্কৃতি
যদি ভালবাসতে মানুষ....দরিদ্র-সরল-অনুগত
যদি ভালবাসতে নিজেকে....বিকৃতানন্দে আকন্ঠ ডুবতে না।
তুমি একাল পেতে, ওকাল পেতে প্রজন্ম থেকে প্রজন্মে
ছড়াতো তোমার নিজস্ব আলো নিজস্ব বংশগতির মাধ্যমে
তুমি সে পথ মাড়ালে না, রে অভাগা পিতা-প্রপিতা
যেভাবে আগুনের শিখার মতো বেড়ে উঠেছিলে লকলকিয়ে
আলো ছড়িয়ে, তাক লাগিয়ে, ঢোল পিটিয়ে
সেভাবেই দহন শেষে ধপ করে নিভে যাচ্ছ একে একে
তোমার পতন কেউ ঠেকাতে পারছে না।


বট ও পাকুড় (শিকড়)/ঢাকা
২৭ আষাঢ় ১৪২৩/সোমবার/১১ জুলাই ২০১৬।