সাদা চোখেই দেখছি
একজন চোখ বাঁধা মানুষকে ঘিরে রেখেছে ন’টি সৈনিক
          তাদের চার ধরণের পোষাক,
          তিন ধরণের অস্ত্র
          চারজন চার রকমের মুখোশ পরিহিত
তিনজনের মুখ দেখা যায়, দু’জন আড়ালে, আরব মুল্লুক।


একজন অস্ত্র হাতে পূর্ণ সামরিক উর্দিতে, জলপাই রঙ
         চক্কর-বক্কর কাপড়ের মুখোশে ঢাকা মুখ
একজন শশ্রুমন্ডিত, পূর্ণ কালো পোশাকে
একজন অস্ত্র হাতে আধা জংলী আধা কালো পোশাকে
          মুখ ঢাকা কালো মাঙ্কি ক্যাপে
একজন অস্ত্রধারী পূর্ণ কালো পোশাকে, শশ্রুমন্ডিত
          মাথায় ধূসর আরবী পাগড়ী
একজন পূর্ণ ধূসর আরবী পোশাকের অস্ত্রধারী
          ধূসর আরবী পাগড়ী মাথায়, অর্ধেক মুখ ঢাকা
একজনের পরণে কেডস প্যান্ট, কিন্তু কালো আলখেল্লা
          ঢেকে রেখেছে উর্ধ্বাঙ্গ, সেও অস্ত্রধারী
একজন পূর্ণ ধূসর আরবী পোশাক ও পাগড়ীতে ছাওয়া
          হাতে চাপাতি, অপর দু’জনকে দেখা যায় না।


পোশাক, মুখোশ, অস্ত্র ও দায়িত্বে এত ভেদাভেদ কেন?
তাহলে কি ধরে নেব .......
          কেউ করছে পরিকল্পনা!
          কেউ মাঠে থেকে রেগুলেট করছে সেটা!
          কেউ স্পটে থেকে বাস্তবায়নের নির্দেশ দিচ্ছে!
          কেউ করছে বাস্তবায়ন, সে শ্রমিক বা কর্মী!
কার নির্দেশে কেন করছে, যে করছে সে কী জানে?
পোশাক, মুখোশ, অস্ত্র ও দায়িত্বে এত যে ভেদাভেদ
          তবু চিন্তায় ও চেতনায় তারা এক ও অভিন্ন
          এ চেতনা কি ইসলাম রক্ষা, প্রসার নাকি..
          পৃথিবী থেকে মুছে ফেলার জন্য..সে এক প্রশ্ন।


সৈন্যরা ঘিরে রেখেছে কালো আলখেল্লা পরা
          একজন মানুষকে, মাঝখানে, মাথা নিচু,
          চোখ বাঁধা, পিছনে হাত বাঁধা, কালো চুল।
সে কী এশিয়ার, নাকি আরবের, নাকি আফ্রিকার
সে কী মুসলিম, খ্রীষ্টান, হিন্দু-বৌদ্ধ নাকি ইহুদী!
          না, ইহুদী হয় তো হবে না!
          কার মায়ের কোল খালি হবে এখন!
          কোন সন্তানরা পিতৃহারা হবে!
          কোন বঁধু হবে স্বামীহারা, বন্ধুরা বান্ধবহারা!
সে গিয়েছিল মরুর বিভীষিকাময় পথে.....
          পেটের দায়ে? কর্তব্যের খাতিরে?
          চাকরীর সুবাদে নাকি জিহাদী জোসে?
          এসব আর জানা যাবে না তার ‍মুখ থেকে;
          যদিও জগত জোড়া জালে ছড়িয়ে যাবে তার
          নাম-ধাম-কর্ম ও বংশ পরিচয়।    


একজন সৈনিক চাপাতি উঁচিয়ে কোপ দিতে উদ্যত,
যদিও চার চারটি ভিন্ন পদের অস্ত্র কমান্ডারদের হাতে
কিন্তু ধর্মের আদেশ তাকে কোপ খেয়েই মরতে হবে।
          এক কোপে এখনি বেরিয়ে যাবে প্রাণবায়ু
          হয়তো রাক্কার মহাসড়কের পাশে
          পড়ে থাকবে তার বেওয়ারিশ লাশ,
          তার লাশের কোন ঠিকানা থাকবে না।
          হবে না তার জানাজা/দাফন/সৎকার,
সে যে মানুষ ছিল এ কথা কারো জানা থাকবে না।
          
চাপাতিওয়ালা হয়তো এখনি বসাবে কোপ
ফিনকি দিয়ে ছুটবে রক্ত, লা...ল, শুদ্ধ লাল.....কারণ
          বুকে সাহস ছিল বলেই গিয়েছিল মরু মুল্লুকে
          নিরোগ শরীর ছিল বলেই রক্তের তেজ ছিল
          তেজী রক্ত বলেই এমন গাঢ় টকটকে লাল।


ইসলাম জিন্দা হোতা হ্যায় হর কারবালাকে বাদ।
বাংলাদেশ ও আরব প্রান্তর এবং আমেরিকা-ইউরোপ
অথবা সমগ্র বিশ্ববাসীর সামনে আজ সেই পুরোনো প্রশ্ন
আর কত কারবালার প্রয়োজন
          ইসলামকে জিন্দা করার জন্য?


বট ও পাকুড় (অবিচ্ছিন্ন)/ঢাকা
২৯ আষাঢ় ১৪২৩/বুধবার/১৩ জুলাই ২০১৬।