সেদিনও আকাশে মেঘ ছিল
বৃষ্টির কোন কমতি ছিল না
কদমের গানও ছিল সঙ্গে
পুকুরের ঘোলা জলে ঢেউ ছিল
মাছেরা ঘাই দিচ্ছিল মনে।
কবি তখন সঙ্গে ছিলেন কবিতার
প্রতিটি ছত্রে ছত্রে বৃষ্টির মতো আগুন ঝরছিল
স্তবকে স্তবকে ঝরছিল আগুনের মতো কান্না
প্রতিটি অশ্রুবিন্দু মেপে চলেছিল সময়ের ঘড়ি
কবি কবিতার হাত ধরে ভিজছিলেন
গজারী বনের সরু কাদামাখা পথ
পায়ে জড়ানো লতা মাড়িয়ে
পাতায় জমা শ্রাবণের ঐশ্বর্য্যকে
আলগোছে ঝরিয়ে এগিয়েছিলেন ....


আজ আবার শ্রাবণ এলো, আবার আকাশে
মেঘের লুকোচুরি খেলা শেষ হয়ে আসে
বৃষ্টির রুপোলী নকশী কাঁথা ভেজায়
মাঠ-বন্দর-মন..মন্দির উপাসনালয়, খেয়াঘাট
কবি বরাবরই উদাসীন ছিলে বেশবাসে
কিন্তু সেদিন ছিলেন ফিটফাট নিপাট।
আজ দেখি তার কাদামাখা কাপড় গুলো
কেউ ভেজায়নি, শুকায়নিও কেউ
অবহেলেই পড়েছিল পথে, এক মৌসুম।
তারপর হয়তো কেউ সেগুলো খুঁজে পেয়েছে
তুলে রেখে দিয়েছে সময়ের ডালে
রোদে ভিজে, হাওয়ায় শুকিয়ে
আপনাতেই প্রস্তুত হয়ে আছে
আরেক কবির আশায়, যে সেগুলোকে
গায়ে তুলে নিয়ে ইতিহাস হবে।


শ্রাবণ এলেই শুনি কবির কন্ঠের গান
কবিরা খুব দুর্বল আর কান্ডজ্ঞানহীন হয়
তা না হলে পৃথিবীর সকল বারুদ
কবিতার ঝিরঝিরে বৃষ্টিতে ভিজে যেত
নেতিয়ে যেন কামানের নল,
যুদ্ধসেনা বাঁশিতে ফুঁ দেয়ার কথা ভুলে
গহীন বনে র‌্যাট্‌ল স্নেকের ঝুমঝুমি শুনে
বেভুল ঘুমিয়ে পড়তো। তা তো হয় না।
এজন্যই কবিদের উপরে ঐশ্বরিক বজ্রপাত হয়
কবিরা হলেন সমাজের সবচেয়ে অপদার্থ স্পিসিস।
..................................................................


২. ব্যস্ততা


এই যে আমি ব্যস্ত ভীষণ
সময় মোটেও হচ্ছে না।
দু’চার কথার গাল-গল্প
পাড়ার মাচায় পা তুলব
না একটু হাওয়া খাবো
প্লানটা মাথায় বসছে না
উল্টে যাচ্ছে বসার আসন।


এই যে ভীষণ ব্যস্ততাতে
নজর দেয়া যাচ্ছে না
দোকান ঘরে ইঁদুর কাটে
ছারপোকা খায় ভাঙ্গা খাটে
ক্যাশবাক্স উঠছে লাটে
মাথাটা কাজ করছে না
জনি না কি উঠবে পাতে।।


বট ও পাকুড় (রিলিফ)/ঢাকা।
০১ শ্রাবণ ১৪২৩/শনিবার/১৬ জুলাই ২০১৬।