শ্রাবণ পেরিয়ে ভাদর এলো যে আঁধারের ডামাডোল
কখনো আকাশে কালো মেঘ দেখি ভাপ ওঠে, দাবানল
মাঠ কি পুড়েছে, বন কি পুড়েছে, তার চেয়ে বড় ভয়
পুড়েই চলেছে বাঙালী মানস, কোথা পাই বরাভয়!


চোখের সামনে ধর্ম পুড়ছে, পুড়ে খাক সরলতা
আদাড়-বাদাড় ছেড়ে ছুড়ে এসে ঘরে বাড়ে ঘৃণালতা
তোমাতে আমার বিশ্বাস টুকু কর্পূর হয়ে ওড়ে
ভক্তি শ্রদ্ধা বিদেশী কব্জা, কালো বাদুড়ের ফেরে।


যে ছিল আমার আদরের ধন, কাঁধে পিঠে নিয়ে যাকে
পার হয়ে গেছি বন্যার জল, সে-ই কেন দূরে থাকে?
যাদের জন্য অন্ন-বস্ত্র, বিলাস বা অধিক দান
তারাই বা কেন হাসিমুখে, দেখি, কাড়ছে নিরীহ প্রাণ!


বিস্ময় নিয়ে নির্বাক হয়ে ভাবছি ভাদর মাসে
জানি না আবার কী হয়ে যাবে অনাহূত কোন ত্রাসে!
সংশয় আর শংকায় মন পুরোপুরি এলোমেলো
এরি মাঝে যেন কখন বর্ষা টা-টা-বাই বলে গেলো।


শরত এসেছে বাংলার নদী রূপসী ধবল কাশে
ঢেকে দেবে তার দুই তীর যেন বুনোহাঁস বাসা পাতে
মাঝ দিয়ে যাবে জেলে ও মাঝি, পাল তোলা ডিঙ্গি নাও
অথবা এসব ছাপিয়ে আসবে কালো ঘোড়া, মরু বাও!


আমার প্রকৃতি টানে না যে মন সে মন কিভাবে পারে
এই যে সবুজ কোমল মাটি, তাকে তাচ্ছিল্য করে!
মুখ ভার করে বিদায় নিয়েছে বর্ষা সঙ্গোপনে
আসছে ঋতুতে চেষ্টায় আছি হাসাবো আপন জনে।


আমার সঙ্গে তোমাকেও চাই, খুলে ফেল কালো সাজ
এই দেশটা তোমার ও আমার, হবে না ডাকিনী রাজ
নির্মল জল, উর্বর মাটি, নিঃশ্বাসে সোঁদা হাওয়া
দেশ জননীর আঁচলের তলে ফেরাটাই ঠিক পাওয়া।