১.


অদৃশ্য সেলুলয়েড


গাড়ীটি চলছিল অদেখা কোন স্থানকে খুঁজে পেতে
যাত্রীর পছন্দমত, চালকের স্টিয়ারিং এ ভর করে।
গাড়ীটি সফল হলো, কিন্তু বিফল হলো চালক এবং
সহযাত্রী যাত্রীরা যারা কাঙ্খিত স্থানকে পেলো না,
তবে পেয়ে গেল অনাকাঙ্খিত অদেখা স্থানকে, হঠাৎই।
এ স্থানের জন্য এসময় তাদের কোন পরিকল্পনা ছিল না
ছিলনা কোন আশা-নিরাশা-হতাশা, ঘৃণা-বিবমিষা কিছুই।
এভাবেই তারেক মাসুদ ও মিশুক মনির অকস্মাৎ
চলো গেলো অদেখা জগতে, অদৃশ্য সেলুলয়েড।


২.


বিশুদ্ধ শব্দমালা


সুন্দর হাতের লেখার জন্য চাই সুন্দর মন
সুন্দর মনের জন্য চাই সুন্দর স্বপ্ন ও কল্পনা
সুন্দর স্বপ্নের জন্য চাই একটি সুন্দরে বসবাস
তিনি এর সব ক’টিকে স্পর্শ করে গেছেন
তেমন অঢেল কিছু রেখে যান নি, তবে
রেখে গেছেন অল্প কিছু কথা আর অঢেল
শব্দ সিঁড়ি, একটি পরিপূর্ণ ভালবাসা ও
বুক ভরা অবারিত দেশ প্রেম, স্পষ্ট চেতনা।
কবি শামসুর রাহমান চলে গেলেন, কতদিন!
কিন্তু তাঁর কবিতা? পুরনো হয়েছি কি দ্যোতনা!
ভালবাসার বিশুদ্ধ শব্দমালা কখনো বিরর্ণ হয় না।


৩.


দু’জন মানুষকে দেখেছিলাম একই সময়ে
একজন ঘরে এবং একজন ঘরের বাইরে।
তাদেরকে মানুষ হিসেবেই দেখেছিলাম,
কিন্তু মানুষ কি ছিলে না তাঁরা? হয়তো ছিলেন।
একজন হয়তো মাটির মানুষ, আরেকজন মহামানব
একজন হয়তো কাজ পাগল, আরেকজন দেশ পাগল
একজন হয়তো কর্তব্যনিষ্ঠ, অন্যজন দেশনিষ্ঠ।


দু’জনই চলে গেলেন দু’দিনের ব্যবধানে,
একজন চলে আমাদের নিকৃষ্ট মনের
আমার কুটিল চোখের আগুনে ভষ্ম হয়ে;
আরেকজন গেলে গেলেন রোগে-শোকে ভুগে।
একজন গেলেন বিষ্ময়াভিভূত হয়ে, দৃপ্তকণ্ঠে
হুঙ্কার দিয়ে, ‘‘কি চাস তোরা? আমাকে কোথায়
নিয়ে যেতে চাস?’’ তখন এ কালের মোহাম্মদী বেগ
পিছন থেকে চালিয়ে দিয়েছে অজানা আগ্নেয়াস্ত্র
অভেদ্য বুলেট বিদ্ধ করেছে তার হৃদয়
পিছন থেকে, তিনি মুখ থুবড়ে পড়ে গেছেন সিঁড়িতে;
অন্যজন  গেলেন বুকভরা গোপন অভিমান নিয়ে
কারো কাছে কোন অভিযোগ না করে, নিভৃতে
কেউ জানলোও না তার প্রস্থানের কথা সেভাবে।