অপেক্ষার দীর্ঘ অন্ধকার সুড়ঙ্গের শেষে আলোর বিন্দু
আছে, বিশ্বাস করি, বিশ্বাস কতদূরে টেনে নেবে?
বিশ্বাসে মেলায় না বস্তু আশ্বাসে মিলতে পারে সেটা।
ভুল প্রবাদ ভুল প্রবচন সময়কে নিয়ে খেলা করে
আমি প্রবল নিকষ প্রতিফলনহীন অন্ধকারে দাঁড়িয়ে
অথচ পার্শ্ববর্তী যে জন, প্রবল আলোতে তাকাতে পারেনা সে।


রূফটপ বাগানে বসে কফির পেয়ালার যাপিত সময়ের
কচকচানি ঝেড়ে ফেলে ফুরফুরে হাওয়ায় যার সময় কাটে
তার দিকে তাকানোর মতো আলোও যখন অনুপস্থিত
তখন অপেক্ষাও বড় তেতো ঠেকে, সেটাকেই অতিক্রম করে
আলোর সরণীর অপেক্ষায় জীবন এখন স্তব্ধ পুকুর;
একটি সামান্য ঢিলের তরঙ্গই ভাঙবে অপেক্ষার আবদ্ধতা।


আরশাদ ইমাম//২৬-০৯-২০১৬//সোমবার//ঢাকা।


(বিশেষ কারণে ২য় কবিতা)


            অমোঘ ঘন্টাধ্বনি


হঠাৎ শুনছি কুকুরের কান্না, যদিও এখন শীত নয়
নয় প্রবল বৃষ্টিপাত, অথবা দাবানল, আগুনের হলকা
তবু কাঁদছে কুকুর, বুক খাঁ খাঁ করছে, বাতাসে অশনি!


কোথাও কোন অনাকাঙ্খিত মৃত্যু এসে হানা দিচ্ছে
ভেঙ্গে যাচ্ছে কোন সাজানো সংসার, পুড়ছে ফসলের ক্ষেত
কোথাও কোন হড়কা বানে ভেঙ্গে যাচ্ছে পরিপাটি উঠোন
লেপাপোছা দেয়াল, ছনের চালা, ভেসে যাচ্ছে বিনে নোটিশে
কোথাও কোন অসময়ের কুয়াশা হঠাৎই ঢেকে ফেলছে
পথ-ঘাট, সড়ক, হাইওয়ে, দ্রুতগামী যান লেন ভুল করে
উঠে যাচ্ছে নিষিদ্ধ লেনে, এলোমেলো চলাফেরা।


সময়টা ভালো নয়, বাতাসটাও বিশুদ্ধ নয়, মৃত্যু এখানে
অনাহূত অতিথির মতো ব্যাপক সমাদর চায়, যদিও কুণ্ঠিত মন
মৃত্যু যখন অমোঘ, তখন প্রস্তুত থাকাই শ্রেয়, যদিও সেটাতে
মনের প্রবল অস্থিতি।
শরীরে আযরাইলের আছর দৃশ্যমান, ক্ষয়িষ্ণু দেহঘড়ি
একে একে মুছছে হাতের রেখা, সংকীর্তন, নামাবলী;
যেতে চাই না, বলাটাও বালখিল্যতার মতো শোনায়
দৌড়ুব কত আর, সাজাবো আর কত, কতই বা আর চাই
সময়ের গ্রন্থিতে ফোটা ফুল আমি, সময় পেরোলেই ঝরে যাই।


বিঃ দ্রঃ


১.   আজ ২৬ সেপ্টেম্বর ২০১৬ তারিখ রাত আনুঃ ১২.৪০ এ আমার ছোট চাচা মৃত্যুবরণ করলেন। আর একজন চাচা আছেন, বাবা-চাচা-জ্যাঠা-ফুপু নয়জনের আর সবাই চলে গেছেন। সকলেই অকালে ৫৫-৬২ বছরে। এবার আমাদের পালা। চাচারা শেষ হতেই আমাদের পালা শুরু। ভাবছি তিনি আসছেন কবে? কবে পড়বে সেই ঘন্টা।


২.   শ্রদ্ধেয় ও প্রিয় কবি সৈয়দ হক নিউমোনিয়ায় আক্রান্ত হয়ে ইউনাইটেড হাসপাতালে চিকিৎসারত। আছেন নিবিড় পরিচর্য্যা কেন্দ্রে (ICU তে)। তাঁর আশু সুস্থ্যতা কামনা করছি।