আমি যখন ভাষার জন্য লড়ছি, তুমি তখন আশার জন্য লড়ছ
সে সম্মুখ লড়াইয়ে তুমি বিজয়ী, সে সম্মুখ লড়াইয়ে আমিও বিজয়ী।


বিজয়ী হয়ে তুমি আশার বীজ বুনেছ, চারা গজেছে,
নানা ঝড়-ঝাপ্টায়, দুর্বিপাকেও তাকে ভেঙ্গে পড়তে দাওনি,
মায়ের মতো আগলে রেখেছ চৌষট্টি বছর, ক্যাস্ত্রো
সেই সযতন লালন ও পাহারা আশাকে বড় করেছে।
আশা এখন পূর্ণতার কাছাকাছি, নতুন বীজ এনেছে পৃথিবীতে।
একদিন যারা আশাকে পরাভূত করবার জন্য অবরুদ্ধ করেছিল
আজ তারাই নতুন আশায় হাত বাড়িয়েছে, উঠিয়ে নিয়েছে অবরোধ।
তুমি সব দেখে গেছ নিজের চোখে, তোমার হাভানা তোমার কিউবা
আজ মহাপ্রতাপশালী প্রতিবেশীর চোখের পুরনো পর্দা সরিয়ে
নতুন পর্দার বিস্তার ঘটিয়েছে; স্বপ্ন দেখছে-দেখাচ্ছে কিউবানরা।
ক্ষুদে এক ভূখন্ড আর কী বা করতে পারে এর চেয়ে বেশি।


আর আমার ভাষার লড়াই আন্দোলন-সংগ্রাম-সম্মুখ লড়াই-সশস্ত্র যুদ্ধ
বিস্তীর্ণ সমুদ্র পেরিয়ে যুদ্ধজয়ী জাতি হিসেবে ছিনিয়ে এনেছে
একটি স্বাধীন দেশ, যদিও এদেশ তাকে যোগ্য সম্মানে ধরে রাখেনি;
তুমি যাকে হিমালয় বলেছিলে, মুজিব, এদেশে জন্ম নেয়া মুষিকেরা
তাঁকে রন্ধ্রে রন্ধ্রে ঝাঁঝরা করেছে, তাঁকে হত্যা করেছে।
আর যে ভাষার সরণী বেয়ে আজ আমি স্বাধীন, সে দেশেরই মানুষ এখন ভিন্ন ভাষায় স্বপ্ন দেখে, নতুন প্রজন্মের নাম শুনে
তুমি বলতে পারবে না এ কী ‘বাংলা’ নামের কোন ভাষার!
এ নাম কি ভাষার সিঁড়ি বেয়ে বিজয়ী বাংলা নামের একটি জাতিগোষ্ঠীর!
বাঙালীর।............আর কিউবান?


বাঙালী জাতি ক্রমশঃ যেন এক হলুদ বিবর্ণ দীর্ঘ লতানো গাছ
যেখানে কিউবানরা আপন আলোয় উদ্ভাসিত এক স্থিতধী জাতি।
এক যাত্রার দীর্ঘ পথ পরিক্রমায় শুনি ভিন্ন মুরতি।


এস, এম, আরশাদ ইমাম, উত্তর ঢাকা।
২৮ নভেম্বর ২০১৬; সোমবার; ১৪ অগ্রহায়ণ ১৪২৩।