ও গুড্ডু দা,আজ একটু তাড়াতাড়ি ছুটি দেবে আমাকে,
কেন রে ? প্রতিদিন মজা নাকি,বস চুপচাপ পড়তে।
আজ পরিবেশ পরব না, অঙ্ক করেই ছুটি,
না না, অঙ্কটা হোক,তারপর পরিবেশটাও হবে মোটামোটি।
ছোট্টো অয়ন,বয়স মোটে দশ, এখনও অনেক জানার বাকি,
এখনও অনেক শেখার আছে, ক্লাস ফাইভে,দেখা স্বপ্নগুলো ঠিক সময়ে পূরণ করা বাকি।
এখন তো যুদ্ধ শুরু হল, চলার পথে আসবে কত বাঁধা,
নিজেকে সমঝে চলতে হবে,ভেদ করতে হবে জীবনের কঠিন ধাঁধা।
আচ্ছা গুড্ডু দা, তুমি থাকবে তো পাশে, ছাড়বে না তো আমায় একা ?
না রে ভাই ওটাই তো আমার দায়িত্ব,তোর ভরসায় আবার  পথেই হবে দেখা।
আচ্ছা অয়ন তুই কি মা- বাবার কষ্ট দূর করে,একটু আনন্দ দিতে চাস না ?
নিষ্পাপ ঠোঁটে উত্তর এলো, হ্যাঁ, চাই তো,বাবা মায়ের সাথে ঘুরতে যেতে,আরোও কত বায়না।
তার জন্য তো করতে মন দিয়ে অনেক পড়া,
কি হতে চাস তুই,মানে বড়ো হয়ে কি কাজ করতে চাস ?
আমি প্লেন চালাতে চাই, আমি ঘুরতে চাই চারপাশ।
আচ্ছা পাইলট,তার জন্য কিন্তু ধৈর্য্য ধরে শুনতে হবে স্যারের কথা,
তাহলেই উড়তে পারবি প্লেনে,আকাশটাকে কাছ থেকে হবে দেখা।
স্বপ্ন অয়নের দেখায় হল,হলো না করা পূরণ,
গাড়ির চাকা পিষলো এসে,স্বপ্নগুলো,অয়নের সাথে করল মৃত্যু বরণ।
গাড়ির মালিককে ধরল লোকে,দেবে নাকি চিকিৎসার সব খরচা,
ওতেই আমরা বেজায় খুশি,আর চিন্তা কি ,টাকায় তো ভরসা
কিন্তু টাকাও বাঁচাতে পারলো না তাকে,
ভগবানও আজ হাত তুলছে, ফেরাতে ব্যর্থ মায়ের সন্তানকে ।
আমিই ভুল, শিক্ষক হয়ে, নিজেকে সবার ঊর্ধ্বে ভেবেছিলাম,
আসল শিক্ষা তো অয়ন দিলো,তাতেই যেন ভেঙে পরলাম।
আমি বলতে ভুলে গেছি রে অয়ন,বেঁচে থাকা মানেই সুখে থাকা,
কোনো কিছুই তার থেকে বড়ো নয়,সুখের খোঁজে আমরা তো সব বোকা।
অর্থ অনেক থাকতে পারে,প্রাণ বিনা সে অর্থ হীন,
সবার হাসিতে, হাসবি যেদিন, সেগুলোই আসল সুখের দিন।
বাঁচার মধ্যে আনন্দ খুঁজে, বাঁচার মাঝেই সুখে থাকা।
বাঁচলে পরে দেখতে পেতিস এ পৃথিবীতে কত পাগল আছে, বেঁচে থাকা ভুলে মেতেছে সঞ্চয়ে,
শুধুই টাকা।