মানসপটে খুঁজিয়া পেনু বাল্যস্মৃতি কত
ছেলেটা আমি দুষ্টুমীতে নিত্য ছিলাম রত।
মায়ের হাতের মারের কথা বলিব কি তা আর
বাবার মোটে তিনটে চড় ও মায়ের সমাহার।
হাজার শাসন, হাজার আদর ছিল প্রেমময়
তাদের ভালোবাসা-শাসন কভু ভোলবার নয়।
মাঝে মাঝে খাইতে বসি কইতাম মারে মা!
জন্মদিন মোর কেমন ছিল বলি-বে কি তা?
মুচকি হেসে মাযে আমায় কইত নোলক নড়ায়
"সূয্যি মামা জাগার আগেই এসছিলি তুই ধরায়।
ফজরের ঐ আজান সময় ঊঠছিলি কেঁদে তুই
আজান তো আর দিতে হয়নি তোর ঐ কর্ন ছুঁই।
কিন্তু বিপদ হইল বাবা;ওরে ও বাছাধন!
মায়ের স্তন্য পেলি নারে তুই দিল যে অন্যজন।
তোর জন্ম থেকে সারা বুকে মোর হইল কিযে ঘাঁ,
কাঁদিসনে বাপ! বড়চাচী তোর হয়েছিল দুধ-মা।
কতদিন আর দুধমা থাকে কৌটার দুধই মা
চেয়ে দেখা ছাড়া কিবা আর করি বুক ভরা মোর ঘাঁ।"
হেসে আমি বলি, "থাক না ওসব বলোনা কেমন করে
সাধিমোবারক হইল তোমাদের বাঁধিলে একই ডোরে।''
শুনে মোর কথা মা-জননী তো আঁচলেতে মুখ ঢাকে
"লাজে লাজে বুঝি মোরে যাবে আজ," বলিল বাবা ফাঁকে।
স্বইচ্ছাতে বাপযে আমার বলিল ডেকে ডেকে
"জেনেছিনু আমি মোর বিয়ে থা- বড় ভাইয়ের থেকে।
বন্ধুরা মোর শুনিয়া সে কি আনন্দ উল্লাস
ঘাড়েতে আমায় তুলিয়া দিল ফেলিয়া পুকুর মাঝ।
জলকেলি করি সেদিন আমার মজা হ'ল বেশুমার
পাঞ্জাবী-পাজামা, টোপর পড়িয়া হইলাম নয়াবর।
এইভাবেতে তোর মার লগে বিয়ে হ'ল মোর
ভালোবাসা আর প্রেমডোরেতে বাঁধিলাম আপন ঘর।"
কথাগুলো বাপ বলে আর বারেক মায়ের পাণে চায়
চোখে চোখে আরো কথার পাহাড় গড়িয়া ভরিয়া যায়।