একটুকরো কাচের উপর দাঁড়িয়ে দেখছি
একদল অসভ্য মানুষ ধরে এনেছে টগবগে এক যুবককে
হয়তো কোনো বিধবা মায়ের একমাত্র সন্তান
যাকে ধরে এনে জ্বলন্ত আগুনের গোলার মতো
উত্তপ্ত তামার পয়সা কপালে চেপে ধরা হয়েছিল
যে কলংকিত দাগ সেখানে দেওয়া হয়েছিল
সেটা ছিল ক্রীতদাসের দাসখতের দাগ
চিৎকার করে আর্তনাদ করেছিল মানুষটা
আকাশ বাতাস খোদার আরশ কেঁপে উঠলেও
মানুষের মন গলেনি |
একটুকরো কাচের উপর দাঁড়িয়ে দেখছি
জীবন যন্ত্রনায় দুর্বিসহ হয়ে একজন মানুষ
বিষ খেয়ে মরেছিল
একটা নীল রঙের চিরকুটে লিখে গিয়েছিলো
আমার মৃত্যুর জন্য কেউ দায়ী নয়
যদিও তাকে মৃত্যুর দিকে তিলে তিলে ঠেলে দিয়েছিলো
হিংস্র মানুষের দল
সবাই খুনি ছিল
মরার আগে কাউকে সে খুনি বলে সনাক্ত করে যায়নি
কিন্তু প্রকৃতির বিচার আর বিবেক প্রতিশোধ
নেবে বলে নীরবে কেঁদেছিলো |
একটুকরো কাচের উপর দাঁড়িয়ে দেখছি
একজন মানুষ
সারা মুখে ছোপ ছাপ আঁচড়ের আভিজাত্যের চিহ্ন ছিল
চুলগুলো উসকো খুসকো, একটু শ্যামলা বর্ণের
সে মাটির উপর দাঁড়িয়ে মানুষের পাপ দেখছিলো
পাপীদের বাধা দিতে গিয়ে অন্যায় ভাবে তাকে পাপী
বানানো হয়েছিল
সে বুঝেছিলো জন্ম আমার আজন্ম পাপ
তবে সে এখনো নিষ্পাপ আছে কিন্তু পাপীদের যা হয়েছিল
তা এখনো কেউ জানতে পারেনি |
একটুকরো কাচের উপর দাঁড়িয়ে দেখছি
খুব বিশ্বাস করতো মানুষকে একজন
মানুষের বিশ্বাসঘাতক মন সে বিশ্বাস ধরে রাখেনি
যাদের বিশ্বাস নিয়ে উজাড় করে ভালোবাসা দিয়েছিলো
কোনো এক মধ্য রাতে সবাই মিলে তাকে কাঙাল বানিয়েছিলো
লোকটা এখনো বেঁচে আছে
আর যারা বিশ্বাস ভঙ্গ করেছিল
তারা এখন রাস্তায় বিশ্বাস হারিয়ে পাগলের মতো
নিজের মৃত্যু কামনায় চেঁচিয়ে বেড়ায় |
কতগুলো ঝাপসা মুখ যারা হঠাত করেই
একটুকরো কাচের উপর দাঁড়িয়ে দেখছি
টাকার নেশায় বুদ্ হওয়া বীভৎস মুখ
একসময় তারা মানুষ ছিল কিন্তু এখন এতো বেশি তাদের
অহংকার বেড়েছে
মনে হয় পৃথিবীটা তাদের পায়ের নিচের দেবে যাবে কিন্তু
সবাই বোবা হয়ে থাকবে
হয়তো তাদের টাকার সাথে ক্ষমতাও বেড়েছে
কিন্তু তাদের অহংকার তাদের পতনের জন্য অপেক্ষা করছে
যেমন অপেক্ষা করছে না খাওয়া মুখগুলো
সে টাকার ভাগ পাবে বলে অধিকারের দাবিতে |