একটা পুরোনো খান্দানি চাদর
যেখানে আমার পূর্বপুরুষের গায়ের গন্ধ
আর কম্পিত অরণ্যের ছন্দ,
লুকানো ছিল
তার থেকে তৈলাক্ত শেকড়ের অলিতে গলিতে
কি একটা অদ্ভুত বিস্ময় আমাকে ছিনিয়ে নিল
আর মনে করিয়ে দিল,
সময় পিছে পড়ে গেছে
এখন কেবল মানুষের আধুনিকতা,
কেমন যেন আড়ষ্টভাব আর দুর্ভেদ্য কৃত্রিমতা
সেখানে নেই সীমাহীন মানবিকতা,
আর আপন জনের মনকে দোলানো বিরহের ইতিকথা,
সব যেন জোনাকির মতো জ্বলে আর নিভে
মন নেই, প্রাণ নেই যেন ফিরে এসেছে আবার
আদিম যুগের কণ্টকিত প্রথা |
সবাই যেন কেমন বদলে যাচ্ছে
নাকি বদলে যাচ্ছে স্বার্থেরা,
যেখানে মানুষের দর দাম উঠা নামা করে
যেখানে শব্দের মাথা নিচু করে থাকে,
যেন নির্মম আঘাতে পেরেকের রক্তে ভরা
কিংবা আর্তনাদ আর হাহাকারে বন মানুষদের
নগর ভেঙে নরকের দুঃস্বপ্ন গড়া,
আর আমার কল্পিত মনের উদার কণ্ঠের ছড়া,
কিংবা অদ্ভুত চোখ সব কিছু ছানা বড়া |
কিছুই বোঝা যায়না
চিঠিগুলো ঠিকানা হারায়
পথ খুঁজে পায়না,
কিন্তু আমার পূর্ব পুরুষের চাদরটা
এখনো আমায় ডাকে,
আমার উদোম গাটা আদর করে ঢাকে,
আর বলে যায় এই পৃথিবী বড় নিষ্ঠুর
যেখানে মানুষ মানুষে জমকালো রং ধরে
নিজেকে ছড়িয়ে রাখে |
তবুও মনে হয় বদলে যাচ্ছে সবাই
চেনারা আজ খুব অচেনা যেন
দূরত্ব যেন নেশার টানে বুদ্ হয়ে
আজ নিজেকে গিলে খায়
আর নেপথ্যের কারিগর সেজে মহাজনের
ডুগডুগি বাজায় |
তবুও শেকড়টা আঁকড়ে থাকে জীবন
জীবনটা আঁকড়ে থাকে মখমলের চাদর
আর ফেলে আসা সেই পুরোনো মনখোলা
মানুষদের মায়ায় জড়িয়ে ধরা অকৃত্রিম আদর
যেথা ঘর গড়ে ঘর
চাঁদের শহর |
সবাই বলে সময় নাকি বদলায়
নাকি বদলে যায় মানুষ
যে মানুষ একদিন গড়ে ছিল ইতিহাস,
সভ্যতার তিলে তিলে করেছে উঠোন ভরা চাষ
তাদের খুঁজছি আমি,
যদি ফিরে পায় আবার হারানো সবুজ ঘাস
আর মানুষে মানুষে মিলনের
তীব্র দহনে ভালোলাগা, ভালোবাসার আশ্বাস |
অপেক্ষায় থাকে চাদর
ঘুনে ধরা আদর
আর টারজানের মতো
কোনো এক ঐতিহ্যের পাতায় হারানো ঝুলন্ত বাঁদর |