কাজের খোঁজে হন্যে হয়ে ঢাকায় এলাম ভাই
এসেই দেখি কমলাপুরে কমলা বাগান নাই।
ঐ মতিঝিলে শুধুই বিল্ডিং কোথায় পাব ঝিল,
নামের সাথে কোন জায়গার নেইতো কোন মিল।
গুলিস্তানের উত্তর-পুবে পা বাড়ালাম যেই–
সেগুন বাগিচায় যেয়ে দেখি সেগুন গাছও নেই।
ধানমন্ডিতে ধান মোটে নেই, মালিবাগে মালি,
সারা ঢাকায় ঘুরে দেখি দালান কোঠা খালি।
রাজারবাগে চেয়ে দেখি নেইকো রাজার বাগ,
শিশুর চেয়ে যুবক লোকেই ভরতি শিশু পার্ক।
সদরঘাটে ঘাট কোন  নেই,ফার্মগেটে নেই ফার্ম,
এত মানুষ  কারো সাথে নেইকো কারো টার্ম।
লালমাটিয়ায় লাল মাটি নেই,মৌচাকে নেই মৌ,
শুধু অশান্তিতে কাঁদে হায়রে শান্তিনগরের বৌ।
নবাবপুরে নবাব তো নেই, ভেবে অবাক হই,
চকবাজারে ঘুরে দেখি চকের দোকান কই ?
বক্সীবাজারে বক্সীরা নেই,মিরপুরে নেই মীর
সন্ধ্যা-সকাল মাস্তানেরা সেথায় জমায় ভীড়।
আরামবাগের মানুষগুলোর নেইক মোটে আরাম
কলকারখানায় কাজের চাপে ঘুম হয়েছে হারাম।
বনানীতে বন কোথাও নেই, পান বাজারে পান
গুলশানে নেই ‘গুলশান আরা’ নাম তবু গুলশান।
শান্তিবাগে শান্তি যে নেই, নেই মগ বাজারে মগ
রাত্রি দিনে পথের ধারে ঘুরছে হাজার ঠগ।
সহজ সরল লোকেরা হয় ঢাকায় এসে বোকা
হাইজ্যাকারের মিষ্টি কথায় খাচ্ছে তারা ধোঁকা
রাস্তা ঘাটের নেইকো দিশা, আজব শহর ঢাকা
অন্য পাশে দেখতে গিয়ে পকেটে নেই টাকা।
চলতে পথে হোঁচট খেয়ে গাড়ির নীচে পড়ে
চেপ্টা হয়ে ভর্তা হয়ে যাচ্ছে মানুষ মরে।
এদিক মোটর, সেদিক মোটর,পথ চলা যে দায়
সারা বেলা ভোঁ ভোঁ শব্দে দু কান ফেটে যায়।
প্রতি দিনেই অশান্তি হায় যাচ্ছে কেবল বেড়ে
তাই ইচ্ছে করে এক্ষুণি যাই ঢাকা শহর ছেড়ে
একটুও নেই জায়গা-জমিন–গড়ব বসত-বাড়ি
এই ঢাকাতেই তবুও হাজার দিচ্ছে মানুষ পাড়ি।