পহেলা বৈশাখ সকাল বেলা বর্ষবরণ করতে বেরিয়ে পড়লাম,
জীর্ণ খাদির ফতুয়া গায়ে জড়িয়ে সাথে পুরনো জিন্স।
স্বচ্ছ বেকার মানুষ তার আবার এতকিছু!
কিন্তু নিজের সংস্কৃতি ঘরে থাকতে দেয় না।
মন বড় টানে,
তাই বেরিয়ে পড়ি।
বারিধারা হতে পায়ে হেঁটে রওনা হই, উদ্দেশ্য গুলশান লেকপার্ক,
দূর হতে দেশী বাদ্যের আওয়াজে মনটা বেশ চনমনে হয়।
পার্কে ঢুকতে যাব, এমন সময় অচেনা কন্ঠের অদৃশ্য আওয়াজ!
"বাবা আমার পোলাডার লাইগা রুটি কিনবাম, কয়ডা টাকা দিবাইন।
সন্দেহ বাতিক মনে তাকাই-
পার্কের গেটের সামনে কোনায় সাত আট বছরের একটি ছেলে ঘুমায়!
তাঁরা মা আমার কাছে টাকা চায়।
প্রশ্ন করি, ও খায় না কয়দিন? বেশতো নাদুস নদুস!
না বাবা কাইল দুপুরে একটা রুটি খাইয়া পইড়া রইছে।
কথা বাড়াতে মন চায় না, তার উপর আজ পহেলা বৈশাখ।
আজ না হয় ঠকলামই!
পকেট হাতরে পঞ্চাশ টাকার একটা নোট ধরাই,
ঠাট্টার ছলে বলি-
আজ ওরে পান্তাভাত খাওয়াইও!
মহিলা বলে উঠে, তাইলে তো আরো একশ লাগব বাবা!
কেন?
ঐখানে মেলায় পান্তা ইলিশ বেঁচে দেড়শো টাকা প্লেট!
জীর্ণ ফতুয়ায় পকেট নাই!
মিছেই তবুও হাতরে বেড়াই।
জিন্সের পকেট হতে মানি ব্যাগ বের করে দেখি ছেঁড়া একটি একশ টাকা।
তাই ঐ মহিলার হাতে দিয়ে উল্টো হাঁটা দেই,
বাসায় যেতে হবে মানিব্যাগ তো ঝাড়া হলো,
পুরনো কাপড়ের সাথে মনকেও ঝাড়তে হবে যে!
এবার সমাজ আর দেশের মননকে বৈশাখী হাওয়ায় ঝাড়তে চাই।
কতটা পারব, কী জানি?
পেছন হতে পোলাও বিরিয়ানীর গন্ধ নাকে সুড়সুড়ি দেয়,
খালি পকেট আমার, হাঁটা দেই।
পেছনে পান্তা ইলিশের ছড়াৎ ছড়াৎ!
পার্কের গেটে দাড়িয়ে অনাহারীর অসহায় মা।
এ যে বাংলার আসল রূপ, কল্পনা না!