কবিতাটি আমার জীবন থেকে নেয়া আর তাই কিছু জায়গায় ব্যক্তি ও স্থানের নাম উল্লেখ পূর্বক দিয়ে দিলাম।


যখন আমার বয়স সাত কি আটে,
বিকেলে গোল্লাছুট খেলতাম-
গ্রামের বিশাল শূন্য ধানীমাঠে।
(ডাকাতিয়া গ্রাম, ভালুকা, ময়মনসিংহ)
দুইটি পক্ষ হত-
একটি রহিমাবুবুর,
অন্যটি ফতেবুবুর।
আমি সর্বদা ফতেবুবুর পক্ষ নিতে চাইতাম।
কেননা, অসম্ভব ভাল লাগত ফতেবুবুকে,
তার সবকিছু আমাকে আকৃষ্ট করত।
অথচ ফতেবুবুর বয়স-
আমার হতে সাত আট বছর বেশী।
আমি তার পক্ষে খেলে পাঁকতে চাইতাম।
প্রাণ পণে  দৌড়াতাম,
না পাঁকলে ফতেবুবু বকত।
পক্ষে নিতে চাই ত না,
তখন কাঁদতাম আর ভাবতাম-
এটাই হয়ত প্রেম ভাল বাসার কান্না!


যখন প্রাইমারীতে ক্লাশ ফোরে পড়ি,
(৫৯ নং ডাকাতিয়া সরকারী প্রাঃ বিঃ)
ভাল লাগল ফাইভের রিচিদিকে।
নির্জন বিকেলে,
সদ্য চুনকাম করা স্কুলের সফেদ দেয়ালে,
কচু পাতা দিয়ে লিখে দিলাম,
রিচি যোগ আশিক।
পরদিন স্কুল খুলতেই,
অফিস কক্ষে হেড স্যারের ডাক।
(আব্দুর রাজ্জাক স্যার)
চরম বেত্রাঘাতে আহত হলাম।
অঝরে কাঁদলাম।
মনকে বুঝালাম প্রেমের তরে কাঁদো।


হাইস্কুলে সিক্সে পড়ার সময়,
(কালিয়া পাড়া ডাকাতিয়া মাজেদা মজিদ উ/বি, সখিপুর, টাংগাইল)
প্রেমে পড়েছিলাম নাইনের বেবীর।
কেমনে যেন ঘটনা ফাঁস হতেই,
বড় ভাইদের চোখ রাঙ্গানি,
শিক্ষক আর পারিবাড়ীক চাপে,
বদলাতে হল স্কুল।
আমার সব কিছু ভূল।
এবারও কাঁদলাম আর মনে মনে ভাবলাম,
প্রেম বিরহের কান্না।


বয়েজ কলেজে পড়তাম।
(নটর ডেম কলেজ, ঢাকা)
ভাল লাগল বাংলার ম্যাডামকে,
(মমতা ম্যাডাম-২০০১)
একদিন ক্লাশে শিষ বাজানোর দায়ে,
ক্লাশ হতে বের করে দিল।
অধ্যক্ষ, ছাত্র পরিচালক,
(যথাক্রমে-ফাঃ বেঞ্জামিন ও ফাঃ বকুল)
সবার দ্বারে হাত জোর করে দাড়ালাম,
ক্ষমা চেয়ে কাঁদলাম।
ভাবলাম এটাই হয়ত প্রেম!


বিশ্ববিদ্যালয়ে প্রথম বর্ষে,
(চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়-২০০৩)
ক্যাফেটেরিতে বসে,
(সমাজ বিজ্ঞান অনুষদ ক্যাফে)
এক অপরুপার পানে তাকিয়ে,
অসংখ্য বার গরম চায়ে ঠোঁট পুড়িয়েছি।
রাত জেগে তাকে ভেবে লিখেছি কবিতা।
অবশেষে অর্থনীতির বিদায় অনুষ্ঠানে,
দেখি সে অর্থনীতির বিদায়ী ছাত্রী!
কাঁদলাম, হাসলাম, মনে মনে বললাম-
হায়রে প্রেম,
হায়রে ভালবাসা!