কতদিন হল গ্রাম ছেড়ে এসেছি,
বাবা-মা, ভাই-বোন আর পরিচিত স্বজন।
যে সন্তান বাবা-মাকে ছেড়ে একদিন বাইরে থাকতে ভয় পায়।
সে কিভাবে এতগুলো মাস কাটিয়ে দিলো!
পাঁচ মাস! একশত পঞ্চাশ দিন!
চট্টগ্রামে পড়ে তোমাদের আমার স্বপ্ন বুননে ব্যস্ত!
মাঝে মাঝে ক্লাশের ফাঁকে কিংবা কাজের অবসরে,
অথবা ঘুম থেকে জেগে কি যেন খুঁজি?
তখন সবকিছু অচেনা লাগে!


মনে পড়ে মা?
একবার স্কুল হোস্টেল হতে কান্না করে পালিয়ে ছিলাম।
শুধু তোমাকে ছেড়ে থাকার ভয়ে!
ছোট বেলায় কোন আত্বীয় বাড়ি থাকতে পারিনি।
তোমাকে ছেড়ে কিভাবে কাটবে একটা রাত!
সে আমার বিরাট কষ্ট!
মনে পড়ে মায়ের আঁচলের সুবাস,
তার ছল ছল চোখের কথা।
জিদ, বিদ্রোহ, কষ্ট, স্নেহ আর ভালবাসা।
এই নিয়ে আমার মা!
শুনেছি ইদানীং বার্ধক্যের রোগও নাকি নিত্যকার সঙ্গী।


মনে পড়ে বাবার নিরীহ শান্ত মুখখানি।
নামাজ শেষে পানের জর্দার সুবাস মিশ্রন করে,
দোয়া পড়ে গায়ে হাত বুলানো আর ফু দেওয়া!
সারা গায়ে সাবান মেখে স্নান করাতেন আমার বাবা।
ভাত মেখে মুখে তুলে খাইয়ে দিতেন,
আর শুনাতেন রকমারী গল্প!
যার সারা জীবনের সঙ্গী শুধুই কষ্ট,
ভাই-বোন সকলে মিলে আবদারে অতিষ্ট করেছি,
বাবার জীবন।


মনে পড়ে এক গ্রাম্য মেয়ের কথাও,
বড় অবুঝ ছিল সে,
আজো তাকে কিছুই বুঝাতে পারলাম না।


আজ আমি আদর স্নেহের বড় কাঙ্গাল,
মনে প্রানে খুঁজি মায়ের আঁচল আর বাবার মুখ,
বারবার!
আর সরল চাহনির সেই মেয়েটি,
যাকে এখনো অনুভব করি অন্তরে!