পাখির ডাক শুনতে শুনতে
কানের সাথে পাখির ডাকের
গভীর এক বন্ধুত্ব হয়ে গেছে।
তাই হয়তো শৈশব থেকেই
পাখির ডাকে আর ঘুম ভাঙেনা।
ঘুম ভাঙতো মায়ের ডাকে।


তবে এখন ঘুম ভাঙে
খুব কাছের এক বন্ধুর ডাকে।


প্রযুক্তির কল্যাণে
জীবনের এই দীর্ঘপথে
হঠাৎ একদিন খুঁজে পাই
নিজের সবথেকে কাছের এই বন্ধুটিকে।


দুজনের বন্ধুত্ব প্রায় একযুগেরও বেশি।


জীবনের বেশিরভাগ মুহুর্তগুলোই
কেটে গেছে প্রিয় বন্ধুটির সাথে।
অবশ্য সামনের দিনগুলোও কাটবে একসাথে
কেননা আমাদের দুজনের বন্ধুত্ব যে আজীবনের।


তবে বন্ধু আমার বহুরূপী।
ছোট বড় বুড়ো সবারই বন্ধু।


যুগের বিবর্তনে বন্ধু আমার বদলায় ঢঙ,
বদলায় হাত, বদলায় ঘর, বদলায় রঙ।


যখন ডাকতে বলি ঠিক তখনই ডাকে,
ডাকতে না করলে বন্ধু আমার ডাকেই না।
এ যেন এক মধুর সম্পর্ক,
তাই মাঝেমাঝে বন্ধুর ডাকেও ঘুম ভাঙেনা।


তবে ইদানীং ঘুমের মাঝে
হঠাৎ বুকটা কেঁপে ওঠে।
করুণ স্বরের একঝাঁক ডাক আসে কানে
ছলছলরূপে চোখটাও জেগে ওঠে।


ভেবেছিলাম আগের সব ডাকগুলোর মত
এই ডাকটার সাথেও হয়তো বন্ধুত্ব হয়ে যাবে।


কিন্তু না,
প্রায় মাস দুয়েক পেরিয়ে গেলো।
এই ডাকের সাথে
কানদুটো যে বন্ধুত্ব করতেই পারলোনা।


ব্যর্থ হয়ে কান আমার করেছে বড্ড অভিমান।


এই ডাক যে কান আর শুনতে চায় না।
এই ডাকা দৃশ্যগুলো চোখ যে আর দেখতে চায় না।


তবুও প্রতিদিন চোখে ভাসে, কানে বাজে।


ও মা, মাগো, সাহায্য দেন মা, একটু সাহায্য করেন।
দুইদিন ধইরা না খাইয়া আছি, কিছু সাহায্য দেন মা।


ও খালাম্মা, খালাম্মাগো, ঘরে খাবার নাই খালাম্মা,
বউ বাচ্চা নিয়া না খাইয়া আছি, কিছু সাহায্য করেন খালাম্মা।


ও স্যার, স্যার গো, একটু সাহায্য করেন স্যার,
কাম নাই, ঘরে খাওন নাই, কিছু সাহায্য দেন স্যার।


এই আহাজারি, এই আর্তনাদ, এই করুণ ডাকে,
আমিও যে আর পারছি না নিজেকে মানিয়ে নিতে।


পর্যাপ্ত সামর্থ্যের অভাবে না পারি কিছু দিতে,
না পারি কিছু বলতে, না পারি কিছু করতে।


ওগো মাবুদ আল্লাহগো, আল্লাহ তুমি রহিম-রহমান।
দয়া করো, ক্ষমা করো, দান করো উত্তম প্রতিদান।