শুক্লা দ্বাদশীর রাতে আকাশে কেন অত বড় চাঁদ উঁকি দেয়
আরবের এক জীর্ণ কুটিরে একাকী এক নারী প্রসব বেদনায় অস্থির
অসীম আকাশ থেকে আলোর মিছিলে ঝলসে যায় ঘর
আমিনার কোলে আসে নতুন শিশু যেন পূর্ণিমার এক চাঁদ
তবুও ঐ গৃহ দারিদ্র্যের অন্ধকারে ডুবে যায়!
অকস্মাৎ ঘুম ভেঙ্গে আরবের বেদুইনরা চেয়ে থাকে বিস্ময়ে
ভোরের আকাশে আজ এত কিসের আলামত
চারিদিকে এত কিসের উল্লাস ধ্বনি শোনা যায়!


নতুন শিশুর খবর পেয়ে উদ্ভাসিত আব্দুল মোতালিব
এ আনন্দের দিনে পুত্র আব্দুল্লার বিয়োগ বেদনা জাগে তার  প্রাণে
কোন এক অদৃশ্য ইশারায় শিশুর নাম রাখে ‘মুহাম্মদ’।
তখন ছিল এক অসীম অন্ধকারের যুগ!
উত্তর থেকে দক্ষিণ পূর্ব থেকে পশ্চিম নিভেছিল সভ্যতার আলো
অবিচার অত্যাচার ব্যভিচার দুর্নীতি সমাজ শাসনের হাতিয়ার
মানুষের হাটে মানুষকে বেচে মেটাত শখের দাম
সুরার পাত্রের সাথে নারী থাকত উপহার, মর্যাদা যেন গৃহপালিত পশু।


দারিদ্রে ঘেরা নিষ্পাপ শিশুকে কে নেয় কোলে!
হৃদয়ে কার এত সাহস তাকে আদরের?
হৃদয়বান হৃদয় দিয়ে মাপে মানুষের দাম
একদিন আমিনার কাছে হালিমা এসে নিয়ে যায় তাকে
দিগন্ত বিস্তৃত মরু প্রান্তরে ছোট এক কুটিরে;
মুক্ত আকাশ মুক্ত বাতাস চারিদিকে বিশাল প্রান্তর
এখানে তার পিতা নেই,মাতা নেই,শিক্ষক নেই।
সে বড় হয়;
মায়া মরীচিকার মরু দিগন্তে কে তাকে শিক্ষা দেয়?
কে তাকে ভালোবাসে,কে দেয় সুরক্ষা?
দুরের নীল আকাশের দিকে সে চেয়ে থাকে
চাঁদ যেন তাকে হাতছানি দেয়,তারারা কাছে ডাকে
বাতাস এসে কানে কানে বলে যায় কি সব গোপন কথা!
দৃশ্য জগতের অন্তরালে সে যেন কতকিছু দেখে।