বইগুলো কাঁচের আলমারী থেকে উঁকি দেয়
বহুকষ্টে দেখতে থাকে অনন্য আধুনিক জগত ;
কতদিন কারোর সাথে হয়নি কোনো বার্তালাপ
যে সময়গুলো মুখোমুখি কেটে যেতো অন্তহীন
এখন এমনি বহমান কম্পুটারের ঝকঝকে পর্দায়;
বইগুলো হীনমন্যতার চিন্তায় ভুগতে থাকে
এখন ওরা, ঘুমের ভিতর চলাফেরাতে অভ্যস্ত
বহুকষ্টে দেখতে থাকে অনন্য আধুনিক জগত;
ওরা দিনলিপি শোনায় যে আদর ওরা পেয়েছিল,
ভাবতে পারেনি কোনোদিন তাহবে স্রোতবিহীন!
ওইসব আদর কদর এখন এঘরে মূল্যবিহীন;
যে সম্পর্কের কথা কাহিনী ওরা বলে যেতে
ওগুলো সবই ছড়িয়ে ছিটিয়ে হয়েছি বিলীন;
বইয়ের পৃষ্ঠা উল্টাতে ধ্বনিত হতো মধুর গুঞ্জন
আরো কত বন্ধদ্বারের গল্পের হতো আগমন;
ওইসব পত্রহীন বিশ্বস্ত অতন্দ্রপ্রহরীরা আজ হিমায়িত  
যারা আর কোনদিন পারবেনা হতে মুকুলিত ।
এমনি অনেক কিছু গেছে কালের গভীরে
মাটির অন্তরালে শিকড়ের মতন ছড়িয়ে চিরনিদ্রিত,
গেলাসের এক চুমুকে হয়ে গেছে মহানির্বাণ।
জিভে জলের উত্সেচক বইয়ের পৃষ্ঠা উল্টাতে  
এখন, তর্জনীর স্পর্শে খুলে যায় নতুন দিগন্ত ।
অনেক তথ্যাবলী উঠে আসে পর্দায়, আকর্ষিত করে;
বইয়ের সাথে যে আন্তরিক সখ্যতা, তা হয়েছে বিনষ্ট।
কখনো ঘুমিয়ে গেছি ওদের বুকের উপর রেখে
কখনো রেখেছি ওদের বাহুর ভিতরে
কখনো জানুতে রেখে কাটিয়েছি অনন্তকাল
জমি ছোঁয়া চৌকিতে রেখে পাঠ করেছি মহাকাব্য ।
এই মুহূর্তগুলো পেলেও হয়তো পেতে পারি!
কিন্ত পাবোনা, যেগুলো থাকতো বইয়ের ভিতর
যেমন শুকনো ফুল, আর থেমে যাওয়া সুখীমুহূর্ত ।
বই চাওয়া পাওয়াতে, পড়ে যাওয়া উঠিয়ে দিতে  
যে সবুজ সম্পর্ক গড়ে উঠতো! সেটা কি হবে ?
সেটা হয়তো আর কোনদিন হবেনা বাস্তবে রূপায়িত ।




*কবি গুলজারের কবিতা ''কিতাবে'' র  ভাবানুবাদ করবার চেষ্টা করেছি ।