চিলেকোঠায় পরে থাকা কাগজ পত্রের ভিড়ে মা আর বাবার অনেকগুলো পুরনো খাম। তার ভিতর একটা…



শ্রীচরণেষু-


      আপনি চলে গেলেন আপনার নাকি সব ছুটি ফুরিয়ে গিয়েছে। আমার এখানে আপনাকে ছাড়া একদম ভাল লাগছেনা। শুধু মন বলছে ছুটি যদি আরও কয়েকদিন বেশি হতো তাহলে বেশ হতো। আপনি  এখন জম্মুর রেলগাড়ি করে চলেছেন আপনার দলের সাথে। আমায় যে বলেছিলেন সাথে নিয়ে যাবেন। সব ব্যবস্থা হয়ে গেলে আমায় কিন্তু নিয়ে যাবেন। জানেন, আপনার কুঁজো হয়ে যাওয়া বিধবাপিসী আমার সাথে রাতে থাকেন। আপনার ছোটবেলার অনেক কথা বলেন। শুনতে শুনতে হাসি পায় আবার  ঘুম ও এসে যায়। আমায় কি সুন্দর ডাকে সোনা বউ ও সোনা বউ ঘুমালি নাকি? অনেক সময় ঘাপটি মেরে পড়ে থাকি। ওই ডাকটা আমার খুব ভালো লাগে আর একবার শুনবার জন্য।
         একদিন মাদার গাছের নিচে দাঁড়িয়ে দেখি সুন্দর লাল সারিবদ্ধ পাখির ঠোঁটের মতন ফুল ফুটে আছে । আর কতগুলো লেজঝোলা পাখি মনের সুখে মধু খাচ্ছে আবার উড়ে যাচ্ছে এফুল থেকে ওফুলে। আপনার বড় বোন প্রমিলা চমকে দিয়ে বলে উঠল – কি বৌদি তুমি নিশ্চিত  দাদার কথা ভাবছ তাইনা, কখন থেকে ডাকছি তাই শুনতেই পারছনা। খাবে কুলের ছেঁচকি নিজে হাতে বানিয়েছি এই দেখো, অমনি জিভে জল এসে গেল। সত্যি সত্যিই জিভে জল এসে গেছিল। সব্বাই খুব ভাল শুধু… থাক ওটা পরের চিঠিতে লিখব ঠিক আছে।
          তাড়াতাড়ি চিঠি লিখবেন। আর ভুলে যাবেননা আমার যাবার ব্যবস্থা করতে যেন ভুল না হয়। আমার মাথার দিব্যি দেওয়া থাকল, একথা আবার পাঁচ কান করবেনা পায়ে পড়ছি, নইলে খুব লজ্জায় পড়বো ।
           ভালো থাকবেন,


নমস্কারান্তে – চরনদাসী সত্যবালা
মেহেরপুর, জেলা – কুষ্টিয়া