বিসর্জনের বাজনায় কাশফুলের দোলার মতন
আলগাভাবে একটা আনন্দের রেশ থাকে ।
আবার আসবে ফিরে একটি বছর ঘুরে
আলো হাসি গানের ডালিটুকু ভরে ।
বাবার মুখে অন্য বিসর্জন কাহিনী
যতবার শুনতাম ততবারই
দেখতাম চোখে আগুন,
দুচোখ জলে ভরে
যেত আমার
আমাদের ।


বাবা এক নিঃশ্বাসে পুরোটা বলে থামানো যেতনা
ভোর সকালে জেনে গেছিল এদেশটা পরদেশ
মা পুকুর ঘাট থেকে দ্রুত দালানে ফিরল
কাঁসার বাসনগুলো ঝনঝন আর্তনাদ
করে মেঝেতে। বাবার মুখ আঁধার ;
পড়া ভুলে ওদের দেখতে থাকি !
মা বলে যারা যাচ্ছে ওরা কারা ?
এই সব ফেলে আমরাও যাব,
রাতের অন্ধকারে গুটি গুটি
চোরের মতন লুকিয়ে;
নিজেদের নতুন
ঠিকানায় ।


বাবার গলার শির ফুলে ওঠে থামনো মুশকিল
খেলার মাঠে বাবলা কাঁটার মতন অচেনারা
বন্ধুর চোখে জল, বিদায় ভালো থাকিস
আরো কি বলতে চায় শোনা হলনা।
বাড়ি ফিরে ফলন্ত কাঁঠাল গাছ
কোপাতে থাকি সর্বশক্তিতে
নিঃশব্দে মা বাধা দেয়;
এখানে যারা আসবে  
ভোগ করবে তারা
অবোধ বৃক্ষ
নির্দোষ ।


ওপার থেকে এপারে এলাম শিকড় ছিঁড়তে ছিঁড়তে
ছোট্ট বোনটা জ্বরের ঘোরে পৃথিবীটা ছেড়ে গেল ;
পথ চলাতে হলনা সাথী,মা একুটও কাঁদেনি!
ভৈরবের উত্তাল স্রোতে সে ভেসে গেল ;
অজানা অচেনা পথে শতেক বিপদ
ভাসানের পরে কাঠামো ঘিরে ;
রয়ে যায় কিছু রং কিছু দড়ি,
সম্বল বলতে শুন্য দুহাত।
কাঁটাতার ডিঙিয়ে
পেলাম স্বদেশ ;
নব্য পরিচয়
ছিন্নমূল ।