হাসি'মা কোথায় যাও ? এইতো সবে এলে ;
সবসময় হাসে গালে টোল পড়ে, তাই সবার কাছে হাসি'মা।
সেদিন ও হাসতে হাসতে বলল - ছেলে কেরালা থেকে ফিরেছে।
হাতে একেবারে কাজ নেই, তাই বউমা বলল ...
থাক থাক বলতে হবে না । পরেরটা আমি জানি।
ছোট ছেলের বাড়ি যাবে না সেটাও জানি । ভাগের মা !
থাকবে কোথায়?
তুমি আমার বাড়ি থাকতে পারনা !
চোখের মুক্তোজল পড়তে দিলনা, মুখ আড়ালে মুছলো।
সেই হাসিমুখে বলল- তা'কি হয় বাবা ; লোকে কি বলবে?
কাজ পেয়েছি স্টেশন পাড়াতে ; সামনেই দুর্গাপূজা ।
সেই কটা দিন না হয় তোমার বাড়ি থাকব, কেমন?
চলে গেল ধীরপায়ে একেবারে চোখ সীমানার বাইরে।
যাহ্‌ জিজ্ঞাসা করা হোল না, ওরা কি রাতে থাকতে দেবে?


ভুলে গেছি নানান কাজে কেমন আছে হাসি'মা !
কেমন যেন মনে আনন্দ হাসি'মা আসবে, থাকবে আমার কাছে।
কাশফুল শিউলি নীল মেঘে সাদা মেঘের ভেলা সাথে হাসি'মা।
এক ফুঁয়েতে নিভে গেল । পরেরদিন সকালে কাগজ খুলে !
সাদাশাড়ি রক্তেভেজা হাসি'মা রেলস্টেশনে পা ছড়িয়ে পড়ে আছে।
মুখে নেই হাসির লেশ, বদলে আছে একরাশ কালো ছায়া ।
বুকের ভিতর কেমন একটা হাহাকার । রক্তাক্ত হচ্ছি প্রতিনিয়ত...


পারলাম না হাসি'মাকে একটু হাসিখুশী রাখতে ।
মানুষের মুখোশে জন্তুগুলো নিজের মা'কেও হয়তো ছাড়বেনা।
নতুন করে আবার মাতৃবিয়োগ। হাসি'মাকে হারিয়ে ফেললাম ।