বন্ধু মিতা


         মাঝে অনেক দিন গড়িয়ে গেছে। মাস্টারমশায় অসুস্থ সে তার প্রিয় ছাত্র ছাত্রীদের মনে মনে মনে খুঁজে বেড়ায়। তুই তখন হন্নে হয়ে আবার আমায় আবিস্কার করে ফেলেছিস মিতা আমিই সেই অনিন্দ। আমাদের ভিতর আর একজন ও ছিল ও সিদ্ধার্থ তোর দাদা। আমরা ত্রয়ী তোর বাবার কাছে শিখে নিতাম স্থায়ী অন্তরা আরোহণ অবরোহণ আলাপ বিলম্বিত আর দ্রুত ত্রিতাল দাদরা কাহারবা আরও কত কি। বছর বছর সঙ্গীত প্রভাকরে দীপ্ত হতে কার না ভাল লাগে । খিদিরপুর থেকে নেতাজিনগর কি কম দূর! যেতে হতো বাবা ছিলেন নাছোড়বান্দা যেতেই হতো প্রত্যেক রবিবার। পাড়ার বন্ধুরা আমায় পেতনা একধরনের জ্বালা বা ঈর্ষা হয়তো
ওদের ও হতো। তখন মেট্রোর সুরঙ্গ খোঁড়া চলত রাস্তা জুড়ে। কপাল ভালো হলে কম সময় লাগত ।  নাহলে আসা যাওয়া নিয়ে সঙ্গীত শিক্ষা ছিল সারাদিনের ব্যপার। মাঝে মধ্যে তোদের বাড়িতে হতো পেট পুজো। বেশ চলছিল, কি যে হোল কি জানি সিদ্ধার্থ আমাদের ফাঁকি দিল। বাবা না'হয় শাসন করেছিল, আর তুই জীবন দিলি লেকের জলে। শরীরটা নীল হয়ে গেছিল। মাষ্টারমশায় মর্গ থেকে আনা লাশ দেখেননি, বরং বলেছিলেন আমার সিধু বেঁচে আছে থাকবেও একদিন ঠিক ফিরে আসবে। তোমরা সবাই নাটক করছ।
       সেদিন থেকে আমাদের সম্পর্ক হারিয়ে গেল। গানের মাস্টারমশায় গম্ভীর স্বরে বললেন - আমি সকলের থেকে স্বেচ্ছায় নির্বাসন নিলাম। তোমরা সবাই থাকো নিজের মতন। সেই শেষ । তবু তুই বেঁচে ছিলি অন্তরে অনেক অনেক অমা আর পূর্ণিমাতে। খোলা চিঠিতে সবটা বলব আজ থামি। আবার কিছু কথা হবে অন্য কোনদিন। ভালো থাকিস।


একান্ত- অনিন্দ