আমি ও ঠিক শেষ মুহূর্তে
চলন্ত ট্রাম থেকে নেমে পড়লাম। আর একটু হলে...
নিজেকে সামলে হাত ভর্তি ধুলো ঝাড়তে থাকলাম।
হঠাৎ চোখে লাগে এক বিচ্ছুরিত আলোকছটা;
মাটি থেকে কুড়িয়ে নিলাম আলোর উৎস;
একরত্তি একটা আংটি তার এতো দ্যুতি
তবে, আংটি বেশ সুন্দর। চেয়ে দেখতে ভাল লাগছে;
পদ্মের মতন খাঁজকাটা মাঝখানে সাদা পাথর।
হিরে হতে পারে আবার নাও হতে পারে।
ওর নরম হাতে এই আংটি দারুন মানাবে।
কিন্ত, সাদাপাথরে ও কার মুখ ভেসে ওঠে ..
ও মুখ আমার খুব চেনা, ওই মুখ কাঁদায় হাসায়
ওই মুখের জন্য কত বছর অপেক্ষা করে আছি।
ওযে অন্যের হাত ধরে সবুজ মাঠে হারিয়ে গেল।
চোখের সামনে ট্রাম এগিয়ে আসছে ,
বিপদ ঘণ্টি আমি কি তবে শুনতে পাইনি
নাকি ট্রামচালক আমাকে দেখতেই পাইনি;
পাদুখানা কেউ বা কারা পেরেক দিয়ে পুঁতে দিয়েছে।
কাল বাজারি পত্রিকাতে থাকবে একটা হেডলাইন।
প্রেমে প্রত্যাখাত এক যুবকের আবার আত্মহত্যা ।
আমার শরীর ভেদ করে ট্রামটা চলে গেল তার গন্তব্যে।


আমার আমিকে আমি দিব্য প্রত্যক্ষ করছি
শরীরে কোন আঁচড় নেই, নেই রক্তের ছিটেফোঁটা ;
নাহ এই শরীরে ব্যথা যন্ত্রণা কিচ্ছু নেই; কেন নেই জানিনা।
শুধু হাতের আংটি তাকে দিতে পারলে খুব ভাল হতো।
এক পা এক পা করে এসে দাঁড়ালাম
রেসকোর্সের সবুজ রেলিঙে হাত রাখলাম।
দারুন উত্তেজনাপূর্ণ গ্যালারি ঘোড়া ছুটছে তীব্র গতিতে।
ওইতে সেই তেজী কালো ঘোড়াটাও ছুটছে
ওর পিঠে যে জকি ছিল সে শুধু একবার ফিরে দেখল।
ওর মৃত্যুর মতন ঠাণ্ডা চাহনিতে আমার বুকে অদ্ভুত কাঁপুনি।
সবাইকে পিছনে রেখে ঘোড়াটা রাজকীয়ভাবে এগোতে থাকে।