আমার আমিকে আমি আর চিনতে পারছিনা।
আমিই যেন আজ আমার কাছে খুব অচেনা,
নিজের হাতে কিনেছি বিষ
আজ আমার আমিকে আমিই হত্যা করব।
আমার আমি কে অমর বানাতে কি না করেছি!
মানুষের কাছে গিয়ে রোজ রোজ মিথ্যা বলেছি
যা আমি নই তাই তাই ওদের বলেছি।
ওরা আমাকে আমাদেরকে বিশ্বাস করেছে।
পাশে থাকার অঙ্গীকার করেছে।
দুহাত ভরে দিয়েছে অজস্র চাঁদের পাহাড়।
না দিলেও ছলে বলে, কখনও কখনও ছিনিয়ে নিয়েছি।
নিজের পায়ের তলার জমি এখন পাকাপোক্ত।
আমার আত্মিয়-স্বজন আমার ছায়ায় ভালই আছে।
তবু ওদের সংশয় বলে ওরা নাকি স্বস্তিতে নেই।
আমি আশ্বাস দিই প্রতিনিয়ত - আমিতো আছি!
অবশ্য আমি নিজের ছায়া দেখে ভয় পেয়ে চমকে উঠি।
অনেকদিন আমিও আমার মুখ আয়নায় আর দেখিনা।


আমি একটা মিথ্যে মানুষ
সাধারণ মানুষগুলো কি বোকা!
ওরা আমার কথায় মোহিত হয়, নিরন্তর নিদারুন ঠকে।
যত ঠকবে ততই আমার লাভ, মানে বাড়বাড়ন্ত।
তবে আমারও চোখে দীর্ঘদিন ঘুম নেই।
কতদিন গভীর ঘুমে নিজেকে আচ্ছন্ন করিনি।
আমার পান্তাভাত খাওয়া মায়ের মুখ আর মনে পড়েনা।
ভালবাসার মানুষটাকে জীবিত থাকতেই দিইনি।
আমার গোপন কথা সে অনেকটা জানত।


তাই একে একে সরিয়ে ফেলেছি কাছের যত মানুষ
কাছে ডেকে নিয়েছি ভাড়া করা লোকগুলোকে।
ওদের রোজ ইচ্ছে করে পাল্টে পাল্টে দিই;
তবু ওদের মনে হয় ওরা যেন সেই একজনই।
কি আশ্চর্য ! ওদের নিজেদের নিরপত্তা দিইনি।
তবু ওরা আমায় রাত্রিদিন পাহারা দেয়।
শত্রুর মুখে ছাই দিয়ে আমায় বাঁচিয়ে রাখে।
রোবট মুখগুলোর কি কঠিন দৃষ্টি।
ওদের রক্তের চরিত্র আমার সাথে মেলে।
তাই কাজ পেয়েছে প্রহরীর আমার প্রহরায়।
যন্ত্রের মতন দাঁড়িয়ে থাকে প্রায় মৃতবৎ ।
আমি অনেকদিন আকাশ দেখিনি
কাল থেকে আমার দীর্ঘ অবকাশ
নীল আকাশটাকে আবার নতুন করে দেখে নেবার।
আগামী কাল খবরের কাগজে কোন খবরটা দেবে?
আমার যবনিকা পাতে'র নাকি নিজেকে হত্যা করবার?