কালরাতে তুমি এসেছিলে
আমি যখন প্রাণপনে ঘুমোনোর চেষ্টা করছি তখন ;
সারা শরীরের অসহ্য যন্ত্রণা তরঙ্গায়িত হচ্ছে ;
মাথার ভিতরে অসহ্য কৃমি কিলবিলিয়ে যাচ্ছে।
নিজেকে মানুষ বলে ভাবতে ঘেন্না করছিল।


আমি যেন আর মানুষ নেই মা...
নন্দিনী আমার ভালবাসা নিয়ে খেলেছে;
দুমড়ে মুচড়ে ফেলে দিয়েছে আস্তাকুড়ে ।
বদলে ফিরিয়ে দিয়েছে একরাশ যন্ত্রণা বিষ...
সেই বিষ সারা শরীর ধিরে ধিরে গ্রাস করছে।
একটু শান্তির জন্য শুঁড়ীখানায় ছুটে গেলাম...
যা কোনদিন করব বলে স্বপ্নেও ভাবিনি, তাই করলাম
নিষিদ্ধপল্লীর মেয়েগুলোকে ভাবলাম ওরা নন্দিনী!
ওরা সবাই মিলে উপহাসের সুরে বলে উঠল
-বিনাপয়সায় পিরিত মেলেনা, যা ভাগ শালা...
তক্ষুনি কে বা কারা আমাকে ধরে বেঁধে
ছুঁড়ে ফেলে দিল নোংরা নর্দমায়
তারপর... আর বলবার ভাষা খুঁজে পেলাম না ।


হঠাৎ গভীররাতে মাধবিলতার গন্ধ পেলাম;
তুমি ভালবাসতে।কাছে থাকলে এই চেনাগন্ধ পেতাম;
চোখ বন্ধ রেখে তোমার অস্তিত্ব বোঝার চেষ্টা করি ...
মাথায় হাত রাখতেই, এক অদ্ভুত অনুভব!
তোমার দেওয়া এ শরীরে যন্ত্রণা ক্লেশ গ্লানি কিচ্ছু নেই;  
আমি যেন তখন ছোট্ট একটা শিশু তোমার কোলে
তুমি তখন দুলে দুলে ঘুমপাড়ানী সুরে গাইছো;
'' ঘুমপাড়ানী মাসি পিসি আমাদের বাড়ি ...
যদি ও জানি তুমি আর নেই। গতবছর বৃদ্ধাশ্রমে রেখে আসার
তিনদিনের মাথায় পৃথিবী থেকে বিদায় নিয়েছো...
তবু তোমার অস্তিত্ব আবার টের পেলাম এই সংকটকালে ।