মণিপুর রাজা পুত্র সন্তান চেয়েছিলেন ।
উদগ্রীব ছিলেন ক্ষণে ক্ষণে মন্ত্রী কে প্রশ্ন ছুঁড়ে দিচ্ছেন ।
অন্দরমহল থেকে কোন খবর আসছেনা কেন ?
মন্ত্রীর সান্ত্বনা বাক্যে তিনি আরো বেশি উত্তেজিত !
বিনয়ে মন্ত্রী বলেন - মহারাজ একটু ধৈর্য রাখুন,
           এই এখুনি সংবাদ এলো বলে ।
তখনি অন্দরমহলে শিশুর কান্নায় প্রাসাদ হয় গুঞ্জরিত ।
কম্পিত খুব সংকুচিত এক দাসী প্রবেশ করে ধীরে ;
স্থির থাকতে না পেরে মহারাজ সিংহ রবে বলে ওঠেন-
কই দেখি দেখি এই সাম্রাজের ভাবি অধিশ্বরকে দেখি ।
          দাসী আরো কুণ্ঠিত হয়ে পিছিয়ে যায় ।
আগুন চোখে বলেন - দাসী দেখাও আমার পুত্র সন্তানকে ।
দাসী অধোবদনে অপারগ হয়ে দেখায় সদ্যজাত কন্যাকে ।
এই মুহুর্তে বিদায় হও বালা, মুখদর্শন করবনা আর ।
মন্ত্রী বলে ওঠেন- মহারাজ, এই পুত্রীই সাম্রাজের অধিশ্বর ।
জনে জনে প্রচার করে দিন, জন্ম নিয়েছে কন্যা নয় পুত্রসন্তান।
বিচলিত রাজা কি জানি কি মনে করে কঠিন সিদ্ধান্ত নিলেন ;
তীক্ষ্ম তরোয়ালে আঙ্গুল কেটে রক্ততিলকে করেন অভিষেক ।
উচ্ছাসিত মন্ত্রী সানন্দে কন্যার নামকরণ করেন ''চিত্রাঙ্গদা''।
মনিপুর রাজা পরম খুশিতে হীরে মুক্তার মালা বিলিয়ে দেন ।


তোমার আমার জনগনের ইচ্ছাতে পুত্রী হয় পুত্র সমান
        নারীদেহে একজন পুরুষের জন্ম নেয়,
অন্তরে অন্তরে গুমরে মরে এক একাকিনী এক নারী ।