সন্ধ্যাবেলায় সাগরদা পড়াতে এসেছে,
খবরের কাগজে মুড়ে একটা প্যাকেট  হাতে দিল ।
আমার হ্তভম্ব চাহনিতে একটু হেসে বলল-
"পাটভাঙ্গা কাঁচা হলুদ রঙের তাঁত বেনারসী আছে।
বেলাকে উপহারটা  দিও, আর বলো চাকরিটা পেয়ে গেছি ।"
বুকটা ধুকপুক করছে ভাবলাম বলি – মোহনার জন্যে নেই কেন ?
হটাত্‍ চমকে দিয়ে সাগরদা বলে উঠলো-
"আজ আর পড়াশোনা হবেনা আমি চললাম ।"


কখন যেন নদী হয়ে এক্কেবারে সাগরের মোহনায়
ঠিক জানি দিদির হাতে প্রিয় শাড়িটা
দেখলেই মাকে মিথ্যে শুনতে হবে ।
বলবে ওর বন্ধু চৈতালি দিয়েছে ।
সরস্বতী পূজোতে অঞ্জলি দেবার জন্য ।
কিছুতেই দেবনা । ইশশশ দিদিটার কি ভাগ্য হিংসে হচ্ছে ।
সাগরদা , আমার চোখের ভাষা পড়তে পারনা ?
অঙ্ক যখন বোঝাও কিচ্ছু বুঝিনা!
সব গোলমাল লাগে ,দেখি তোমার পুরু ঠোটের ওঠা-নামা ।
তখন তোমার জোড়াভুরুতে ধনুকের মতো প্রশ্নবান ?
'মোহনা অঙ্কে মন দাও ।' শুনেও শুনিনা  ।
পাটভাঙ্গা শাড়ির ভাঁজ খুলতেই  চিঠি চোখে পড়ে !
বেলা, দেখা কোরো জাগরীর কামিনী গাছের নিচে ।  
শরীরে শাড়ি জড়ালাম, এলোচুলে পলাশ গুঁজে
আয়নার সামনে নিজেকে মেলে দিলাম ...
নিজেকে নিজের অনন্যা মনে হল ।  
খুব চেনা একটা গায়ের গন্ধ পাচ্ছি  ।
মনে হল সাগরদা ছুটে এসে জড়িয়ে ধরেছে ,
ইচ্ছা করে চোখ খুলিনি... কিছুতেই বলতে পারলামনা,  
যে আমি বেলা নই মোহনা।