সামনেই মহালয়া । বাড়ির টবে শিউলি আজিই ফুটল। কেমন করে জানি, তোর মুখ ভেসে উঠল। সেই গানের রিহার্সাল তোর বাবার কাছে আমি তুই সুগত আরও অনেকে। অবশেষে আসে মহালয়ার রাত। অনেক দুরের শিক্ষার্থী বলে থেকে গেলাম তোদের বাড়ি। একসাথে খাওয়া রাতে গল্প করতে করতে ঘুমিয়ে যাওয়া। সময় হয়ে গেছে তাই ধড়ফড় করে ঘুম ভেঙে আসরে প্রস্তুতি। শুরু গান দুর্গা-স্তোত্র '' মাতঃ দুর্গে! সিংহবাহিনি সর্ব্বশক্তিদায়িনী মাতঃ'' নামী দামী সব শিল্পীরা আলো করে বসে অনুষ্ঠান চলছে মাস্টারমশায়-এর গানের ঘরে। সব ঠিক যেন রেডিওর মহালয়া চোখে দেখছি। গর্বে আমার কেমন যেন মন আলোয় ভরে গেল। এদের সবার সাথে আমিও গানে আছি ছিলাম ও বেশ কিছু বছর। তারপর...
       তারপর ছিল আর একটা মজা। অনুষ্ঠান শেষে পাশের বাড়ির বাগানে শিউলি কুড়ানো ছিল শেষ পাতে দই মিষ্টি চাটনির মতন। অনেক অনেক ফুল হত আর মিতা তোর মুখটা ফুলের মতন কেমন পবিত্র লাগত, ভোর সকালের রোদ্দুরের মতন। একবার শিউলিতলায় গিয়ে অবাক! একটা ও শিউলি মাটিতে নেই কে বা কারা আগেই নিয়ে গেছে।তুই খুব হতাস! - যাহ কি হবে রাজা'দা । সুগত ওর দাদা আমার বন্ধু ভ্যাবলার মতন চেয়ে আছে আমার দিকে। আমি বললাম - কিরে গাছে উঠতে পারিস? মাথা দুলিয়ে অসম্মতি জানায়। আমি একলাফে পাঁচিলে উঠে গাছ ঝাড়া দিয়ে সব ফুল মাটিতে নামিয়ে দিলাম। শেষে হুনুমানের মতো লাফ দিয়ে নামলাম। তখন তোদের চোখ ছানাবড়া ! বীরের মতন দুহাতে ধুলো ঝেড়ে বলি এগুলো আমি অনায়াসেই পাড়ি শুধু গানেই সুরের কড়িমা'য়ে গলা আসেনা। তারপর...
        হটাত করে সুগত রাহুগ্রাসের মতন হারিয়ে গেল। তোদের পরিবারে এলো ভাঁটা... সব গতি হারিয়ে সম্পর্কে লাগল গ্রহন। আজ আবার মনে পড়ল। পারমিতা এই খোলা চিঠি তোরই জন্যে। তবে তুই কোনদিন পাবিনা কেননা এটা ঠিকানা বিহীন খোলা চিঠি।