আমার হাতে গানের খাতা
দাদার দুইহাতে ডুগী আর তবলা।
বাবার কাছে একটা হারমনিয়াম।
টিক টিক করে সময় বলছে অনুষ্ঠানের সময় আসন্ন।
রিক্সার জন্য অপেক্ষা। কাজের সময় এমনি হয়।
অমাবস্যার চাঁদের মতন হাতেটানা রিক্সা এলো।
উনি দাঁড়িয়ে থাকলেন হারমনিয়াম সাথে করে।
আমাদের রিক্সা কিছু সময় থাকতেই পৌঁছে গেল।
অনুষ্ঠানের কর্মকর্তারা - ও তোমরা এসে পড়েছ ।
এই ঠাণ্ডাঘোরে বিশ্রাম নাও, সময় হলে ডেকে নেব।


আমি খুব উদ্বিগ্ন । দাদা বলল- অত ভাবিস না।
সময় সম্পর্কে বাবা খুব সচেতন। ঠিক এসে পড়বে।
বার বার রাস্তা দেখি এই বুঝি আসে এই বুঝি আসে।
ঘোষণা শুনেই - বুকের ভিতর চমক দিয়ে উঠল ।
রক্তদান শিবির শুরু হবে সংগীতের মাধ্যমে।
দাদা আর আমি গুটি গুটি পায়ে মঞ্চে চলেছি।
নিজেই নিজেকে বলছি - বাবা এখনও এলনা তবে...
"ভাবিস না ভাই গানটা ঠিক করে করিস।"
মঞ্চে সাজান আমার সাধের হারমনিয়াম।
কিন্তু বাবা... সেখানে নেই। বাবা কোথায় গেল?


গান শেষ হতেই বাবার নাম ঘোষণা -
এবারের প্রথম রক্তদাতা যিনি
তিনি আর কেউ নন এই খুদে গায়কের পিতা।
আমার চোখে তখন কুলকুল জলের রেখা।
কিছু পরে বাবাও পাশে দাঁড়াল।
কর্মকর্তারা বলে চলেছে - রক্তদাতার কথা আর একটু বলি।
রিক্সা পাননি তাই সময়কে হার মানাতে উনি নিজেই
ঘাড়ে করে হারমনিয়াম নিয়ে এসেছেন সন্তানের জন্য।
আমরা গোলাপ ফুল দিয়ে বরণ করে নিচ্ছি।


প্রশ্ন না উত্তর। নাকি দুটোই
উদার একটা আকাশ হয়তো বাবার নাম।