হব না হব না করেও শেষমেশ বড় হয়ে গেছি।
শুধু বড় নয়, তার চেয়েও ঢের বেশী কিছু।
দরজা জানালাগুলো যেন
বেশ সমীহের চোখে দেখে আজকাল।
ছাদে যাবার সিঁড়িটা আর আমায় দেখলে মুখ ভেঙ্গায় না,
রেলিঙ্ পিছলে নামতে গেলে
বয়েস চমকে দিয়ে হেঁকে ওঠে,
পারমিশন নেই হে…
সেই পুরনো খাটখানা? শুয়ে শুয়ে মাথার ওপরে
কাঠের রোলার ঘোরানোর মজা?
বুঝবে না কেউ।
যার নিচে একরাশ অন্ধকার রহস্যের দেশ,
বাক্স প্যাটরা আর পুরনো বাসন অধিবাসী।
নেই সেই খাট, আজ নেই সেই ঘর।
ঘরের ক্ষেত্রফল বদলায়, চরিত্র বদলায়, উষ্ণতা বদলায়।
বদলায় না শুধু স্মৃতি, বদলায় না টিসটিসে কিছু ব্যথা।
কত না পুরনো কথা মাঝে মাঝে উঁকি মারে
মনের জানালায়।
সেই হাতে দম দেওয়া পিন লাগানো গ্রামোফোন
সেই কাপড়ের ঝোলা ফোল্ডিং ইজি চেয়ার,
সেই মাধবি লতার গাছ,
সেই ফুলে ফুল গুঁজে মালা গাঁথা।
সেই মাটির আঘ্রাণ।
বাড়ির বাইরে ছুটে যাওয়া ওই দূরের রাস্তাগুলো
যা কখনো শেষ হতে চাইত না,
আজ পড়শির মনের মতই
কেমন যেন গুটিয়ে ছোট হয়ে গেছে।
বুড়ো দামড়া টক টক দেশী ফলগাছগুলোও
জায়গা ছেড়ে দিয়েছে ছোট ছোট
কলমের পেছন পাকা গাছগুলোকে।
চড়ুই পাখির মত হারিয়ে যাচ্ছে
ছোট ছোট সব সস্তা অথচ অমূল্য পল।
তবুও এগোতে হয় সময়ের হাত ধরে।
তবুও মনের কোনে টিসটিসে ব্যথা কিছু থাকে
এবং বুঝি, অবশেষে বড় হয়ে গেছি।