আমি নারীবাদী, কিম্বা নই, অথচ পিতৃতান্ত্রিক সমাজে আমি এক নারী ।
কিন্তু আপনি এসে আমাকে বললেন তুমি চিরদুঃখিনী,
অপরিসীম দুঃখের মধ্যে আমার শোষিত দিন,
যেখানে আমি এক নারী,
আমার মানসিক কষ্টের দিন, আর শেষ হয় না,
মনে মনে আমি আরো জীর্ণ আরো সিক্ত হয়ে পড়লাম ।
এক দিন হঠাৎ করে আবার আপনার দেখা,  বললেন,
মন দিয়ে চিন্তা ভাবনা করলাম, মনে হচ্ছে,
চিরদুঃখিনী শব্দটিও ভালো নয়, তুমি হলে নিঃসঙ্গ নারী,
বস্তুত দীর্ঘ নিঃসঙ্গতায় আমার দিবানিশি কেটে চলেছে,


আপনি ভীষণ দয়ালু তাই আবার এলেন, আপনি বললেন, তোমাকে নিঃসঙ্গ বলাটা ঠিক হয়নি,
তুমি নিঃসঙ্গ কেন হবে,
তোমাকে চিরকাল পুরুষেরা শুধু বঞ্চিত করেছে,
তুমি বঞ্চিত, তুমি চিরবঞ্চিত ।
তাই আমার বঞ্চনার শেষ নেই, বঞ্চনায় আমি ক্লিষ্ট,
দুইএর ভোগের সৃষ্টি আমার শরীর দিয়ে নেমে আসে,
অবোধকে বুকে আশ্রয় দিই উষ্ণ ধারায় বাঁচাই,
বা সবাইকে দিয়ে থুয়ে আধপেটা বা না'খেয়েও কখন,
পিতৃতান্ত্রিক সমাজে আমি বারবার জর্জরিত,
আমি ধর্ষিতা হয়েছি রুগ্ন মানসিকতায় ছিন্ন বিছিন্ন,


বারে বারে আয়নায় সেই মিল খুঁজি,
পূর্বপুরুষের সাথে আমার যদি কোন মিল পাই,
কি জানি আসলে যতই শিক্ষিত হোই না কেন,
মুক্তচিন্তার মধ্যে বেড়ে উঠলেও,
সব সময় নিজেকে মনে হয়,
নিজের ওয়াই ক্রোমোজোমের অভাব ।
আমার সকল প্রগতিশীল চিন্তা গুলোর উপর এটাই যেন উই পোকার একটা বাসা,
সামাজিক বিধি-নিষেধের মধ্যে প্রতিদিন বিষ গেলা,


এর শেষ নেই, যতদিন পুরুষ-নারী অস্তিত্ব আছে,
এরা পুড়ানো সুরার মতো নতুন নতুন বোতলে মোড়কে, যুগে যুগে গ্রাহকের সামনে নতুন রূপে ধরা দিয়েছে, দিচ্ছে, দেবে ।
তবুও আপনাকে অজস্র ধন্যবাদ জানাই,
আমার প্রতি আপনার সহানুভূতিকে,
আর আপনার প্রগাঢ় হিতৈষী চিন্তাকে,
আপনাকে অনেক ধন্যবাদ !