//এক//
সময়...টা হবে,
হয় তো শ্রাবণ,
রাস্তায় নেমেছিল,
অজস্র ধারায় প্লাবন।
আকাশেতে ছিল,
ভরা ঘন মেঘ,
উপরে বিদ্যুৎ খেলছিল,
আর ছিল বাতাসেতে বেগ।
ঠাণ্ডা ছিল,
সেঁতসেঁতে বাতাসের ছোঁয়ায়,
আবেগহীন স্পর্শ,
ঠিক যেন এক কালো সন্ধ্যায়।
বীতশ্রদ্ধ,
আমার মন ছিল ভারী,
যত তাড়াতাড়ি সম্ভব,
ছেড়ে পালালাম অফিস-কাছারি।


//দুই//
ঘরে ফিরে ভাল লাগছিল না,
কিছুতেই আজ বসছিল'না মন,
ওদিকে বাজছিল একটানা,
আমার মোবাইল ফোন।
মোবাইল নিতে অপর প্রান্তে,
ভেসে এল কণ্ঠস্বর,
গেস্ট-হাউসে পার্টি স্যার,
প্রস্তুত আজ ওই সমুদ্রের ধার।
পৌঁছে দেখি পার্টি সমাগম,
ধূমায়িত ভিড়ে-ভাড়ে,
কেউ গলা-ধরে কেউ পায়ে-পড়ে,
ঠেলাঠেলি করে মরে।
সবাইয়ের মাঝে নিজেকে তখন,
বেমানান লাগছিল,
বড় হলঘরটা চিড়িয়াখানা,
নিজে বহুরূপী মনে হোল।


//তিন//
সমুদ্রের ধার...ঠাণ্ডা হাওয়ায়,
জেটি পলায়ন ত্রাসে,
উত্তাল ঢেউ... মিশে ছিল প্রায়,
প্লাবন ধারার গ্রাসে।
খিলখিল হাসি... নৈঃশব্ধ্য ভাঙিয়ে,
কে যেন বসলো কাছে,
চেয়ে দেখি... পাশে শ্রাবণের ধারার,
শ্রাবন্তি যে বসে আছে!
নিস্তব্ধ কবিতার স্রোতে,
সে’ছিল নাটোরের বনলতা সেন,
চোখে চোখ রাখি,
শুধায় আমাকে একটু জলে নামাবেন?
হিমেল বাতাস ভাঙ্গছিল,
জলের স্রোতেরা... মাটিতে শতশত,
চাঁদ-তারা ছিল... ছিলাম আমি,
সে ছিল আমার পাশে... ছায়ার মতো।
হাতে হাত ছিল...আধো জোছনায়,
ভীরু ছিল দুইটি মন,
কালো ঝাউ বন...শিস্ দিয়ে যায়,
শ্রাবণের বাতায়ন।
কথা নেই কোন...নির্ভয় মন,
নেশায় দুচোখ মলিনি,
অতিদূরে... এক অনুভূতি ছিল,
দেহের কুণ্ডলিনী।
সংসার পথে... সহসাই আজ,
চলার পিপাসা জাগে,
শ্রাবণের সেই উতল পবন,
তার শিথিল চুলের আগে।
বিলোল আঁচল ওড়ে নীলাচলে,
তারই রাগের অন্তিম সাজ,
বিভোর গন্ধে জাগি শিহরণে,
নিজে মনে হয় চিরকুমার আজ।
ভুল যদি এত মধুরময়ী...তবে,
শত ভুলে আমি রাজি,
মনে হল আজ মালয় সাগরে,
হাল ভাঙ্গা আমি মাঝি।