দুই’জন বৈজ্ঞানিক নিজেদের সংলাপে,
মদের গ্লাসের চুমুকটা শেষ করে হাত কাঁপে,
তারা শুঁড়িখানার বাহিরে বকে চলে প্রলাপে,
দুজনে তাকাল ঊর্ধ্ব আকাশে নেশার উত্তাপে।


প্রথমঃ
দেখ চাঁদ সুন্দরীকে কেমন যেন ফ্যাঁকাসে,
সুনীল ওই আকাশে।


দ্বিতীয়ঃ
উঁহু, গতকাল চাঁদ আমাকে বলে ছিল পালাব!
অসহ্য কবিদের আঁতলামো, সূর্যকে জ্বালাব,
আমাকে প্রতি’দিন অভ্যাসের সহবাস করে,
রূপ আর মাধূর্যকে প্রতি’মুহূর্তে চুষে তবে ছাড়ে,
কামনার দাসী, আমি সর্বদাই হোই ছাই,
সূর্যের ঔরসে গর্ভে জন্মাল জোছনা তাই,
তোরা জোছনা আর আমাকেও চাস,
প্রতিদিন কবিতায় মইথুন করে যাস।


প্রথমঃ
দূর, পৃথিবীর আকর্ষণে চাঁদ সুন্দরী, সূর্য তো ভিলেন,
গ্রহণ হয়ে চাঁদকে মাঝে মধ্যে গেলেন।


দ্বিতীয়ঃ
বাজে কথা, পৃথিবী হিজড়াদের মাপে,
জোর নেই তার তাপে,
ছিন্ন আকর্ষণে চাঁদ যাবে একদিন,  
দূরে ডাকছে তারারা আর এলিয়েন।


সেই মুহূর্তে চারিদিক আমাবস্যায় হোল অন্ধকার আচ্ছন্ন,
প্রথম দ্বিতীয়কে জড়িয়ে ভয়ে বলল পৃথিবী কাঁপছে জঘন্য।
কি হোল? নিজেকে কেমন ভারী লাগছে!
হটাৎ দুই’জন চুপ চাঁদের কণ্ঠস্বর সোনা যাচ্ছে !


বিদায়, তোরা যা খুশী কর,
অনেক সহেছি এবার মর,
সূর্যকে করিয়েছি রাজী,
জিতবই আজ বাসনার বাজী,
চেয়ে দেখ ছিন্নগতিতে মুক্ত আকাশে শ্বেত হংসীর মতো উড়ে যাই,
সব বাধাকে ছিন্ন করে অসীমের তরে মহাশূন্যে ধ্রুবতারাতে ঠিক পাব ঠাঁই।


সারা ব্রহ্মাণ্ডে একটা প্রবল ঝাঁকুনি--- শক্ আফটার শক্--- এর পরে, সব ক্ষান্ত,
হয়েছিল শান্ত,
অসীম শান্তির নীল স্তব্ধতায়---
দীর্ঘ দিনে ব্রহ্মাণ্ড’ও পরিশ্রান্ত।
তারপর?

--- শোনাগেল এক গম্ভীর কণ্ঠস্বর সৃষ্টিকর্তার!
“চাঁদের রূপ ও জোছনা মৃত, কিছুই আর নাই,
চাঁদের কলঙ্ক বলে কারোর কোন অভিযোগ নাই,
সত্যি চাঁদ কি পেয়েছিল ধ্রুবতারাকে?
পেয়েছিল কোন এক কক্ষপথে তবে মৃত’তারাকে”


পরদিন সকালে দুই বৈজ্ঞানিক চেয়ে দেখে পাশে ঘাস পাথরের বিছানা,
দুজনেই সমস্বরে বলে উঠল “মরার ভয়ে চিৎ হয়ে শুয়ে আছি, স্বপ্ন আর দেখি না”।


-------------------------------------------------------------------------


উপরের এই কবিতাটি একজন বন্ধুকে স্বল্প-নাট্যকবিতা হিসাবে উপহার দিয়ে ছিলাম। বন্ধুটি উড়িয়া ভাষায় অনুবাদ করে ও মঞ্চস্থ করে, তাতে অনেকের দৃষ্টি আকর্ষণ করে। জানিনা কবিতাটির আকারে কেমন রূপ পেল।