হয়তো তুমি কাঁদছ, শুধু কাঁদছ, আর শুকিয়ে যাচ্ছে চোখের জল।
হয়তো। হয়তো তুমি একটু ঘুমতে চাও;
তারপর শান্ত করে দাও রাত্রি
শান্ত করে দাও বাদুড়ের ডানা।
সূর্যালোকের অনুমতি নেই তোমার পলকে প্রবেশের।
শীতল বাতাসে ছুঁতে পারে না তোমার ভ্রূ।
কারুর অনুমতি নেই তোমায় জাগানোর:
আমি না হয় পাইন গাছের ছাতা ধরব তোমার উপর।
হয়তো, তুমি শুনতে পাও কেঁচোর মাটি খোঁড়ার শব্দ,
অথবা তৃণের জল পানের আওয়াজ।
হয়তো এই শব্দগুলো বেশি প্রীতিকর তোমার কানে
মানুষের চিৎকারের থেকেও।
তারপর চোখের পাতা বুজে ফেল অচিরেই।
তোমার ঘুম আমি ভাঙাবো না।
শুধু তোমায় ঢেকে দেব, নরম হলদে মাটি দিয়ে।
আর, কাগজের টাকা পোড়া ছাই ধীরে ধীরে উড়িয়ে নেবে বাতাস।
কবিতাটি অয়েন ইডুও (২৪ নভেম্বর ১৮৯৯ – ১৫ জুলাই ১৯৪৬) নামক এক বিখ্যাত চীনা কবি ও দার্শনিকের লেখা। আমেরিকায় পড়াশুনা শেষ করে ১৯২২ সালে দেশে ফেরেন। শিকাগোয় থাকা কালীন তিনি তাঁর প্রথম কাব্যগ্রন্থ ‘হংজু’ বাঃ ‘লাল মোমবাতি’ প্রকাশ করেন। দেশে ফিরে ১৯২৮ এ প্রকাশ করেন ওনার দ্বিতীয় কাব্যগ্রন্থ ‘সিছুই’ না ‘স্থির পানি’। উনি পেশাগত শিক্ষক ছিলেন। ১৯৪৪ সালে উনি চীন গণতান্ত্রিক দলে যোগদান করেন। ওনার কিছু সরকার বিরোধী লেখার জন্য ওনাকে ব্ল্যাক লিস্টেড করে দেওয়া হয়। ১৯৪৬ সালে ওনাকে গুপ্তহত্যা করা হয়। এই কবিতাটি ওনার বিখ্যাত ব্ল্যাক লিস্টেড কবিতাগুলোর একটি।
কাজের চাপে লেখার সময় পাই নি। তাই এই অনুবাদ কবিতাটাই পোস্ট করলাম। এই কবিতাটি অনুবাদ করি শ্রদ্ধেয় কবি দেবব্রত সান্যাল মহাশয়ের অনুরোধে। চীন দেশের কবিদের নিয়ে আমি বিশেষত আলোচনা সভাতেই লিখি। বহু প্রিয় কবির অনুরোধে চীন দেশের এই কবিতাটা আসরে দিলাম। আশা করি খারাপ লাগলো না আপনাদের।