তিনি এক মহান পুরুষ ।
আমার দেখা আকাশ এবং পাহাড়ের সংমিশ্রণে গড়া কোন এক মানব ।
তার সাথে যখন পরিচয় হয় তখন আমি বোধের নিম্ন স্তরে বসবাস করি ।
আমি আমার গুরু আজাদ স্যারের কথা বলছি ।
তিনি প্রথমে যখন আমাকে ছাত্র হিসেবে ভাবলেন-
তখন আমি অস্টম শ্রেণিতে পড়ি ।
প্রায় সময় তার রাগান্বিত আচরণ ও মুখ আমাকে ভয়ের দড়জায় বসিয়ে রাখতো ।
তার সমাজ দর্শন, ভালবাসার দর্শন, স্নেহের দর্শন অনেকটা বিয়োগ ক্রিয়ায় আমার কাছ থেকে লুকায়িত ছিল ।
তার অতি মার্জিত ভঙ্গিও লুকায়িত ছিল ।
তিনি যখন অংক করাতেন তখন আমি পাখিদের সাথে আকাশে উড়ে বেড়াতাম ।
মাথার ভিতরে তখন চলতো শূণ্যস্থানে জন্ম নিয়ে আজব আবেগের খেলা ।
তখন আমি ছিলাম আমার মতো
প্রথাগত শিক্ষা তখন দুর্ভিক্ষ মনে হতো ।
আজাদ স্যার আপনাকে বারবার বলতে চেয়েছিলাম আমরা দুর্ভিক্ষ নামক একটি সামাজিক ব্যধি নিয়ে বড় হচ্ছি ।
কারণ- শিক্ষা নামক শব্দ প্রথাগত বই_এ পাওয়া যায় না ।
স্যার আপনার প্রতি শ্রদ্ধা ছিল অসীম
কারণ- আপনি শৃঙ্খলাবোধ শিখিয়েছেন আর শিখিয়েছেন কিভাবে বড়দের সম্মান করতে হয় ছোটদের স্নেহ করতে হয় ।
তবে আপনার প্রতি কিছু বিষয়ে ভুল ভ্রান্তি ছিল, যা আপনি কাটিয়ে দিয়েছেন ।
আমি ভাবতাম- আপনার উচ্চতর রাগের প্রভাব এখনও রয়েছে আপনার ভিতরে ।
কিন্তু বাস্তব জীবনের সময়কালে আপনি যখন আমার সাথে হাত মেলালেন,
তখন আপনার প্রতি ভয়ের মাত্রা কমে গেল,
আমি আপনাকে আবিষ্কার করলাম আমার বাবার মতো করে,
আমার বাবাকেও হাত মেলাতে দেখেছিলাম ।
আপনি যখন আমার মতো এক মধ্যম সারির প্রথাগত ছাত্রকে আপনার এই কালের ছাত্রদের সাথে পরিচয় করালেন গর্ব নিয়ে ।
তখন আপনার প্রতি ভালবাসা আরো বেড়ে গেলো ।
আপনি হয়ে গেলেন এই বাস্তববাদী ছাত্রের অলিখিত এক দলিল !
যেখানে লেখা আছে জমিনের উত্তরসূরি তাঁরাই হবে, যারা সত্যিকারের মানুষরূপে নিজেকে প্রতিষ্ঠিত করেছে ।
স্যার আপনি চিরকাল বেঁচে থাকবেন আমাদের রূপে ।