আমি রুদ্র রবির ত্যাজোদীপ্ত আলো
আমি অগ্নিশিখায় পুড়িয়ে করি সব কালো।
আমি শোষণের সিংহাসন মানি না
আমি শত্রু সেনার হুংকারে আর ডরি না।
আমি রুদ্ধ কারাগার করি ধ্বংস
আমি রেখে যাব বসুধা বক্ষে মম বিদ্রোহী বংশ।
আমি মহারণে মহাবীর
আমি শমসের হাতে রাত্রি নিশিতে করি সব চৌচির।
আমি জাগ্রতচিত্তের চিরচেনা সব চাওয়া
আমি ঘরহারা পথবাসীর দুঃখের গান গাওয়া।
আমি উষার আকাশে রক্তিম রবির প্রভা
আমি অচেনা শিল্পীর শ্যামলিমা ছবির শোভা।
আমি অবলা বালার হাতের কনক বালা
আমি ক্ষুধিতের ঘুমহীন নয়নের জ্বালা।
আমি নিবিড় নিশির সবুজ ঘাসের শিশির
আমি উদাসী কবির চিত্তে অজানা অচেনা তিমির।
আমি গহন রাতের তীর্ব তমসা
আমি দামিনী জ্বলা নিশিদিনে প্রবল বরষা।
আমি শান্তির তরে পথে প্রান্তরে শান্তির ধ্বজাধারী
আমি আপনার লাগি হতে পারি দারুণ স্বেচ্ছাচারী।
আমি বসুধা বক্ষে লক্ষে অলক্ষে করি সব চুরমার
আমি বিনাশ, হাহুতাশ আমি রাহুর গ্রাস বসুধার।
আমি দরি,গিরি, পর্বত
আমি উচ্চ করি শির মম বক্ষে পুষি অপরিমেয় হিম্মত।
আমি অপরুপা  ষোড়শীর পড়শি
আমি স্বপ্নচারিনী,  মনোহারিনীকে  করেছি আমার আরশি।
আমি খাঁটি প্রেমিক -প্রেমিকার অপূর্ব এক জুটি
আমি কুসুম বাগে রাগে অনুরাগে সবার তরে ফুটি।
আমি আষাঢ় গগনের বারি ঝরানো মেঘ
আমি গগনের গায়ে মাতোয়ারা হয়ে  বাড়াই হাওয়ার বেগ।
আমি নৃত্য, গীতির ছন্দ
আমি আপনার তরে করি সব করতলগত বুঝিনা ভাল-মন্দ।
আমি অগ্নি গিরির জ্বলন্ত লাভা
আমি বাদল দিনের মেঘলা আকাশের জ্বলে ওঠা ক্ষণ প্রভা।
আমি তিমির করিব হায় হরণ
আমি স্বপ্ন সবার পায়ে দলে যাই করি আপনার আশা পূরণ।
আমি বাজাই যুদ্ধের দামামা
আমি আপনারে রাঙাতে নিশিতে প্রভাতে করি হায় হাঙ্গামা।
আমি পাতালে মাতাল,অগ্নি, তুফান
আমি শত্রু বক্ষে হানি বিষাণ।
আমি তরুণ মাঝি নামটি গাজি তুলেছি তরীর ধবল পাল
আমি দরিয়া মাঝে চালাই তরী ধরিয়া তরীর ঐ হাল।
আমি কাঠফাটা রোদ্দুর, বটবৃক্ষের সুশীতল ছায়া
আমি দুঃখীর তরে মম অন্তরে পুষে ভাই অপরিমেয় মায়া।
আমি ফুটন্ত ফুলের অপরূপ পরাগরেণু
আমি  রাখালের হাতে বাজানো প্রণয় বেণু।
আমি ভাই পিঞ্জর ভাঙা পাখি
আমি মনের বনে ডানা মেলে উড়ি ভোর বিহানে করি ডাকাডাকি।
আমি মায়ের শেখানো প্রথম বুলি
আমি মায়ের পায়ের রাঙা পদধূলি।
আমি ভাই বাবার বুকের জমিন
আমি আপনারে ভাবি কিশোর, যুবক, নবীন।
আমি পদ্মপুকুরে জলকেলি করা ষোড়শী বালিকার চুল
আমি দিবস যামিনী শান্তির তরে গান গাওয়া বুলবুল।
আমি পৃথ্বীর বুকে মহারণ হুংকার
আমি ঈসরাফিলের শিঙার মহা প্রলয় ফুৎকার।
রচনাকাল : ১২ আষাঢ় ১৪২৩ বঙাব্দ
রাত: ১১:০০ ঘটিকা।
গাজীনগর,পাথারিয়া,দক্ষিণ সুনামগঞ্জ।