আজ হতে শতবর্ষ পরে যখন শতাব্দী উত্তরণ হবে ;
মহাকাল কিছুটা বিবর্তনের কক্ষপথে এগিয়ে যাবে ।
পেছনে রেখে যাবে শুধু রক্তে ভেজানো আদ্র-ঘাস ,
বুক ফাটানো চিৎকার,আর বাতাসে ত্রাহি ত্রাহি ত্রাস ।
কান্নার কলরোলে কালোমেঘ আকাশ-বাতাসে ভাসবে  ,
মনে হাল্কা হাওয়ার দোলা লেগে ঘন ঘন বারিপাত হবে ।
ওরা যেদিকে তাকাবে দেখবে উত্তরসূরীর হাড়ের শেষাংশ ;
জলের ওপরে ভাসবে গনহত্যা আসামীর কঙ্কাল-জীবাশ্ম ।
স্মৃতি জুড়ে থাকবে ধূসর গোধূলির গেরুয়া প্রান্তর ;
ইতিহাসের সুপ্ত বিদারক পাতা ব্যথা দেয় অনন্তর ।
আঁকবে মনে ক্ষত বিক্ষত বুকের পাঁজরে পদচিহ্ন ;
দিবস রজনী দুলবে পাতায় ,জীবন হবে ছিন্ন ভিন্ন ।
পিশাচর পাপিষ্ঠ আত্মা ভয় দেখাবে স্বপনের গভীরে ;
উত্তরসুরি র কৃত কর্মের ফল ভুগবে তুমি অগোচরে ।


মহারুদ্র সূর্য তার ললাট ভরা আগুনের প্রখরে ;
রশ্মি জালের লেলিহানে দগ্ধ করবে, প্রতি প্রহরে  ।
আজকের জাগ্রত আগ্নেয়গিরি কাল হবে সুপ্ত ;
ধমনী শুকিয়ে গিয়ে ক্রমে ক্রমে হয়ে যাবে লুপ্ত ।
লাভা সেদিন শক্ত কঠিন শিলায় পরিনত হবে,
গরম রক্ত শীতল গাঢ় হয়ে মেটে রঙে মিলাবে ।
রাতের কালবৈশাখীর ঝড় কাল হবে পেয়জল ;
তলের কাদায় সমাধিস্থ আছে কত কৃত কর্মফল ।
আজ জীবন্মৃত বিধ্বংসী সন্ত্রাসীর ধ্বংস সাধনা,
কাল হবে ওদের আগামী প্রজন্মের প্রাপ্য বেদনা ।


প্রশান্ত মহাসাগরের উপকূল হয়ে উঠবে হয়ত উর্বর;
সবুজ সৃষ্টির ফেলে আসা পদাঙ্কে র 'পরে হবে নির্ভর।
ওরা মৃদু-মৃদু বাতাসে দুলবে, হাতে হাত রেখে গাইবে,
নির্মল জলের ঝর্ণা ধারায় ওরা যে ঐক্যতানে নাইবে।
হাসবে অশ্রু ঢেলে খোলা মনে ,প্রশ্ন করবে তীক্ষ্ণ বাণে;
হয়তো বা তানপুরা বাঁচবে না , তবু সুর আসবে কানে।
কাঁদবে হৃদয় ঝর ঝর করে অঝরে , শুধু প্রশ্ন সুধাবে,
কেন এঁকেছিল ওরা রক্তলেখা কত নিরীহের ওভাবে ?
যুগান্তরে রঙ বদলায় আস্তিকতা নাস্তিকতায় গড়ায় ;
সেখানে নিছক শব্দরা মৌন হয়ে পথের দিশা হারায় ।
যুক্তি তর্ক ভূতলে পড়ে কবরের সাথে খেলা করে ;
উষ্মা বাণীর মাঝে উত্তর বাষ্প দেহত্যাগ করে, মরে ।
শত বছর পরে কি দেবে উত্তর ওরা আগামীর কাছে ;
থাকবে না জানি, তবু প্রশ্ন তাড়া করবে পিছে পিছে ।


বাবুল আচার্যী  17/07/2016